টানা আট বছরের ধৈর্য এবং নিরলস চেষ্টার সাফল্য পেলেন জাহির।সম্প্রতি ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ‘এ ক্যাটাগরি’-তে চাকরি পেয়েছেন। নজির গড়েছেন। অথচ টিউশন পড়িয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একসময় সংসারের খরচও জোগাতে হয়েছে তাকে। সেই ছেলের সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে গোটা গ্রাম।
গ্রামের নয়াগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর বিনপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন জাহির। তার পর পশ্চিম মেদিনীপুরের মাড়াতলা সাহাবুদ্দিন মডেল স্কুলে নবম-দশম ও হাওড়া জেলার বাগনানের মৌলানা আজাদ অ্যাকাডেমিতে বিজ্ঞান বিষয়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে মেদিনীপুর ডে কলেজ থেকে ২০১৫ রসায়ন বিষয়ে অনার্স নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হন। তবে আর পড়া হয়নি।
advertisement
লক্ষ্য ছিল সিভিল সার্ভিস, বার বার পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। তবে ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি। পরিবারে আর্থিক অনটনের জেরে ২০১৯ সাল থেকেই টিউশন পড়ানো শুরু করেন। ২০১৯ সালে ‘মিসলেনিয়াস’ ও ২০২০ সালে ‘ডব্লিউবিসিএস’ পরীক্ষায় পাশ করলেও ইন্টারভিউতে সফল হতে পারেননি। তবে ২০২১ এ অবশ্য সব বাধা জয় করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ‘এ ক্যাটাগরি’-তে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব রেভেনিউ অফিসার হিসেবে চাকরি পেয়েছেন।
শেখ জাহিরের বাবা শেখ সেলিম পেশায় দর্জি। কোনও মতে চলত সংসার। তবে এখন অবশ্য সংসারের খরচ সামলান জাহিরই।নেননি কোনও পেশাগত শিক্ষকের কাছে প্রশিক্ষণ।ইন্টারনেট, অনলাইনে পড়াশুনা করে মিলেছে সাফল্য।জাহিরের বাবা বলেন, ” আমি চাই ছেলে সৎ পথে থেকে কাজ করুক। ওকে দেখানো স্বপ্ন আমাদের সফল হয়েছে।” জাহির জানাচ্ছেন, ‘‘ অবশ্যই স্বপ্ন সফল হয়েছে। চেষ্টা থাকলে শেষ পর্যন্ত সফলতা পাওয়া যায়। তা হাতেনাতে প্রমাণ পেলাম।”