পেশায় উদ্যোগপতি সনাতন দাসের দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। তিনি বেশ কয়েকবছর আগে মেয়ে পাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। ২০০৭ সালে কয়েকজনকে সঙ্গে গিয়ে গড়েন একটি অর্গানাইজেশন বা সংস্থা। যে কমিটির মূল কাজই ছিল পাচার হওয়া মেয়েদের উদ্ধার করা এবং পাচারের আগেই বিয়ের উপযুক্ত দুঃস্থ পরিবারের কন্যা সন্তানদের বিয়ের জিনিসপত্র দিয়ে পাত্রস্থ করা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ আপনার গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল আসল তো? অভিযানে নেমে আঁতকে উঠছে পুলিশ
মাধ্যমিক পাস করা সনাতন দাসের এই নেশা সন্তানদের বিয়ে দেওয়া। ২০০৮ সাল থেকে ২০০৯-২০১০-১১ একে একে ২০২২ সাল এই পর্যন্ত তিনি ১৬৪৯ জোড়া বিয়ে দিয়েছেন। শুধু বিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হন না সনাতন, দম্পতিকে পালঙ্ক, সাইকেল, আলমারির পাশাপাশি পাত্রীকে আংটি, বরযাত্রী ও কনেযাত্রীর জন্য ভুরিভোজের ব্যবস্থা করেন। এক একটি ডেটে তিনি প্রায় কয়েক জোড়া বিবাহ আসর বসান। আর তাতে উপস্থিত হয় দুই পরিবারের লোকজন-সহ গ্রামের বহু মানুষ। ২০১২ সালে প্রায় একসঙ্গে ৩২ জোড়া পাত্র-পাত্রী তিনি বিবাহ দিয়েছেন এবং তাতে লোক সংখ্যা খাওয়া-দাওয়া করেছে প্রায় ২৫ হাজার।
আরও পড়ুনঃ কয়লার বস্তাকে ঢাল করে সাংঘাতিক ষড়যন্ত্র! অভিযানে নেমে বন কর্মীদের চক্ষু চড়কগাছ
তার গণবিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন এলাকার জনপ্রতিনিধি বিধায়ক ও কাউন্সিলর পঞ্চায়েতের সদস্যরা। কখনও কখনও মন্ত্রী এবং জেলা পুলিশ আধিকারিকরাও আসেন নবদম্পতিদের আশীর্বাদ করতে। শুধু বিয়ে দেওয়াই নয়, বিয়ের পরেও সেই সব পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন সনাতন। তাঁদের সন্তান হওয়া থেকে কোনও সমস্যায় পড়লে তাঁদের পাশে দাঁড়ান। 'সনাতন ভাই' হিসেবেই সম্বোধন করেন গ্রামের মানুষ।
তাঁর এই কমিটির সদস্য সংখ্যা ১২০ থেকে এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে ২,৫০০। ডিজিটাল যুগে মোবাইলের মাধ্যমে বহু পরিবার যোগাযোগ করছে। এক সময় রেডিও শুনে এবং রেডিও টিভির মাধ্যমে মেয়ের বাবা মা, তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল যুগে মোবাইল, ফেসবুক সোশ্যাল সাইটেই পরিচয় করানো হচ্ছে।এ রপর নির্দিষ্ট ফর্ম ফিল-আপের পরেই বিবাহ আসরে বসানো হচ্ছে এই জঙ্গলমহলে।তবে সনাতনের টার্গেট এক লক্ষ ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেবেন। সেই লক্ষেই এগিয়ে চলেছেন।
Partha Mukherjee