মূলত সিবিআই তৎপরতার জেরে আসানসোল সংশোধনাগার এখন রাজ্যবাসীর কাছে পরিচিত। তবে এই পরিচয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমস্যা বেড়েছে কারা কর্তৃপক্ষের। অযাচিত ফোনে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন আসানসোল সংশোধনাগারের কর্মীরা। লাগাতার বেজে চলেছে সংশোধনাগারের ল্যান্ড ফোন। ওপার থেকে অফিশিয়াল কথাবার্তা ছাড়াও উড়ে আসছে নানারকম মন্তব্য। যা নিয়ে রীতিমত বিরক্ত কারা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ! মর্মান্তিক মোরবিতে বিজেপি সাংসদের গোটা পরিবার শেষ, ১২ সদস্যের মৃত্যু!
advertisement
আসানসোল সংশোধনাগার সূত্রে খবর, সিবিআই তৎপরতার আগে পর্যন্ত সেই ভাবে ব্যবহার হত না আসানসোল সংশোধনাগার ল্যান্ড ফোনটি। শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ কিছু অফিসিয়াল কাজ কর্মের জন্য এই ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করা হত। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, এই ল্যান্ড ফোনের কাছে বেশিরভাগ সময় কারা কর্মীদের কাউকে না কাউকে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে। কারণ মিনিটে মিনিটে বেজে চলেছে সংশোধনাগারের ল্যান্ডফোনটি। আর বেশিরভাগ ফোনই আসছে অযাচিতভাবে, এবং এই ফোন কলগুলি ভিত্তিহীন বলেই খবর কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা দিল গুজরাত! রাজ্যের ঝুলন্ত ব্রিজ, উড়ালপুলগুলি নিয়ে তড়িঘড়ি রিপোর্ট তলব নবান্নের
মূলত যে সমস্ত হেভিওয়েট বন্দিরা এই সময় আসানসোল সংশোধনাগারে রয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য করে আসছে এই সমস্ত অযাচিত ফোনগুলি, এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, কখনও কোনও বন্দিকে দিয়ে কাজ করানোর দাবি তুলছেন ফোনের ওপারের ব্যক্তি। কখনও আবার তাদের উদ্দেশ্য করে নানা রকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপের নিদান দেওয়া হচ্ছে ফোনের ওপার থেকে। কখনও আবার ফোন করে জানতে চাওয়া হচ্ছে মেনু। আবার সিবিআই অভিযান হলে বলা হচ্ছে, পাশের সেল ফাঁকা রাখতে। আবার কখনও কখনও হেভিওয়েটদের অনুগামীরাও ফোন করছেন। খোঁজ খবর নিচ্ছেন তাদের। অন্যদিকে, মাঝেমধ্যে আসছে অফিসিয়াল ফোনগুলিও।
এতদিন পর্যন্ত নিজস্ব মোবাইলেই বেশিরভাগ প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলতেন আসানসোলের কারা কর্মীরা। তবে যখন থেকে আসানসোল সংশোধনাগার সিবিআই এর দৌলতে বিশেষ তকমা পেয়েছে, তখন থেকেই সংশোধনাগারের ল্যান্ডফোনটিও যেন কঙ্কালসার চেহারা থেকে যুবক হয়ে উঠেছে। সব সময় বেজে চলেছে ফোনটি। তাতেই রীতিমত বিরক্ত কারা কর্মীদের একাংশ।
সূত্রের খবর, এই সমস্ত অযাচিত ফোন কল থেকে মুক্তি পেতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তাভাবনা করছে আসানসোল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। যে সমস্ত মানুষজন অযাচিতভাবে উরো ফোন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক পদক্ষেপ করার চিন্তা ভাবনা চলছে বলে খবর। বিষয়টি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার জন্যই পদক্ষেপ করার চিন্তা ভাবনা করছে কারা কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, এমনিতেই আসানসোল সংশোধনাগারে পর্যাপ্ত কারা কর্মীর অভাব রয়েছে। অন্যদিকে হেভিওয়েটরা বন্দি থাকায়, নিরাপত্তার বিষয়টিতে বিশেষভাবে জোর দিতে হচ্ছে। তার মধ্যে অযাচিত ফোন কলে ব্যাঘাত ঘটছে কাজের। সেজন্যই অযাচিত ফোন কল বন্ধ করতে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে আসানসোল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
নয়ন ঘোষ