আরও পড়ুন:
তদন্তকারীদের অনুমান, রাগের মাথায় এই খুন করা হয়নি। রীতিমতো পরিকল্পনা মাফিক আইনজীবী ব্রজেশ্বর দাসকে খুন করা হয়েছে। প্রমাণ লোপাট থেকে দেহ পুড়িয়ে ফেলা, সব জায়গাতেই ছিল নিখুঁত পরিকল্পনা। আইনজীবীকে খুন করার পরেও তার স্ত্রী এবং শ্বশুর রীতিমতো স্বাভাবিক ছিলেন। এমনটাই জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে। জানা গিয়েছে, আসানসোলের গোধূলি এলাকার ফ্ল্যাট থেকে আইনজীবীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় অন্ডালের খাসকাজোরা এলাকায়। সেখানেই রয়েছে মৃত আইনজীবী শ্বশুর বাড়ি। দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি চার চাকা গাড়ি ভাড়া করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: ‘ভোট এলেই ভয় লাগে!’ বোমায় উড়ে গিয়েছিল ছোট্ট মেয়ের হাত! কেমন আছে পৌলমী? আজও চোখে মুখে আতঙ্ক!
দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় যাতে গাড়ি চালকের কোনও সন্দেহ না হয়, সেজন্য পরিকল্পনা করেছিলেন দু’জন। আইনজীবীর দেহটি ভরা হয় একটি বস্তায়। দেহের ওপর বস্তায় ঠেসে ভরে দেওয়া হয় নানা রকম বাসনপত্র। এরপর গাড়ি চালকের বিশ্বাস অর্জন করতে বাবা মেয়েকে উদ্দেশ্য করে শোনান, বাপের বাড়ি যাওয়ার সময় এত বাসনপত্র নেওয়ার কি প্রয়োজন। অন্ডালে পৌঁছানোর পর আইনজীবীর দেহটি পোড়ানোর ব্যবস্থা করেন দু’জনে। দেহ পুড়ে যাওয়ার গন্ধ ঢাকতে তার সঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় টায়ার। যাতে করে দেহ পোড়ার গন্ধ ঢেকে যায় এবং প্রতিবেশীদেরও কোনও সন্দেহ না হয়।
আরও পড়ুন: শহরের সঙ্গে যোগাযোগ নেই! হামাগুড়ি দিয়েই জীবন কাটছে গোটা গ্রামের মানুষের! জানুন
আইনজীবী ব্রজেশ্বর দাসের দেহটি পুড়িয়ে ফেলার পর, দেহের হাড়গুলির সদগতি করার ব্যবস্থা করেন তার শ্বশুর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জামাইয়ের দেহ পুড়িয়ে ফেলার পর সেই হাড়গোড় গুলি সংগ্রহ করে ফেলে দিয়ে আসেন তার শ্বশুর তারকনাথ দাস। তাছাড়া আইনজীবীর স্ত্রী শম্পা দাস এবং শ্বশুর তারকনাথ দাস খুন করার দিন দুপুরে সবজি ভাত খেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাতেও তারা দেহটি সদগতি করার পর দুধ রুটি খেয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
অন্যদিকে এই ঘটনায় প্রমাণ লোপাটে সাহায্যের জন্য একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার সুধীর কুমার নীলকান্তম। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় মনোজ দাস নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনোজ দাস আগে ওই আইনজীবীর মুহুরী হিসেবে কাজ করতেন। সেই সূত্রেই আইনজীবির স্ত্রীর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব তৈরি হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে আইনজীবী ব্রজেশ্বর দাস নিজের মুহুরী পাল্টে ফেলেন। কিন্তু তারপরেও আইনজীবির স্ত্রীর সঙ্গে মনোজের যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে এমন ঠান্ডা মাথায় খুনের ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে যাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
Nayan Ghosh