প্রত্যেক দিন ভবঘুরেদের মুখে একবেলার খাবার তুলে দেওয়ার কাজ করে চলেছেন তিনি। প্রতিদিন প্রায় ২০০ জন ভবঘুরেদের মুখে রাতের খাবার তুলে দেওয়া হয় তাঁর উদ্যোগে। যদিও এই কাজে সংগঠনের প্রত্যেক সদস্যই সমানভাবে জড়িত। ফুড ব্যাঙ্কের জন্য দিতে হয় না আর্থিক ডোনেশন। সংগঠনের সদস্যদের বিশেষ দিনগুলিতে, তাঁরা এই ফুড ব্যাঙ্কের জন্য খাবার দান করেন। তাছাড়া প্রতিদিন সংগঠনের সদস্যদের সাহায্যে খাবার সংগ্রহ করে রাতে তা তুলে দেওয়া হয় ভবঘুরেদের মুখে। আসানসোল স্টেশন সংলগ্ন একটি সেন্টার এবং বার্নপুর স্টেশন সংলগ্ন একটি সেন্টারে প্রায় ২০০ জনকে প্রতিদিন রাতের খাবার তুলে দেওয়া হয় ফুড ব্যাঙ্কের মাধ্যমে।
advertisement
আরও পড়ুন : সকাল বিকেল চা ছাড়া চলে না, কিন্তু কাপ-প্লেট-ট্রে-এর বাংলা প্রতিশব্দই ভুলে গিয়েছে বাঙালি
২০১৮ সালে এই পথ চলা শুরু হয়েছিল। অভুক্ত মানুষদের দেখে স্থির থাকতে পারেননি বুম্বা মুখোপাধ্যায়। নিজের সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি শুরু করেন ফুড ব্যাঙ্ক। প্রথম প্রথম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। প্রতিদিন খাবারের টাকা যোগাড় করা, সেটা পৌঁছানো - এসব নিয়ে বিক্ষিপ্ত সমস্যা চলত। কিন্তু সদস্যদের ডেডিকেশন এবং সবারই এগিয়ে আসায় সেই সমস্যা সমাধান হয়ে গিয়েছে। সদস্যরা নিজেদের পরিবারের প্রিয়জনদের স্পেশাল দিন পালন করতে এগিয়ে আসেন এই ফুড ব্যাঙ্কে।
আরও পড়ুন : মিলিয়ে দিল মানবিকতা! দূরপাল্লার রেলগাড়িতে হারানো খেলনা ফিরল শিশুর হাতে, বন্ধ হল কান্না
তবে শুধু সদস্যরাই নয়, আসানসোল শহরের বিভিন্ন মানুষ এগিয়ে এসেছেন ফুড ব্যাঙ্কের সঙ্গে। ফুড ব্যাঙ্ক খাবার সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গা থেকে। তারপর সেই খাবার তারা নিয়মিতভাবে তুলে দেন ফুটপাথবাসী ভবঘুরেদের হাতে। প্রতিদিন রুটি সবজি-সহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে আবার মাংস ভাত, বিরিয়ানি-সহ নানা মুখরোচক খাবার দান করে ফুড ব্যাঙ্ক। এভাবেই ফুড ব্যাঙ্ক চলে আসছে দেড় হাজার দিন ধরে।
আসানসোল, বার্নপুর ছাড়িয়ে এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা যেমন মুর্শিদাবাদ, ডোমকল, কলকাতার বিভিন্ন স্থানে এই ফুড ব্যাঙ্ক নিয়মিতভাবে চলছে। পাশাপাশি রাজ্যের বাইরেও ঝাড়খন্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এমনকি বারাণসীর দশাশ্বমেধ ঘাটেও এই ফুড ব্যাঙ্ক প্রায়দিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।