আরও পড়ুন: ঢাকের তালে অন্যেরা নাচলেও নিজেদের জীবনেই ঘটছে ছন্দপতন! মন ভাল নেই ওঁদের
ফেলে আসা অতীতের কথা বলতে গিয়ে প্রবীণ পুতুল নাচ শিল্পী হরগোবিন্দ দেবশর্মা জানান, বালাস গ্রামের পুতল নাচ একটা সময় শুধু জেলায় নয়, রাজ্যের মানুষদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। সেই সময় এই পুতুল নাচ দেখতে সাধারণ মানুষ ভিড় করত। শকুন্তলা, লায়লা মজনু, ভক্ত প্রল্লাদ, রাজা হরিশচন্দ্র মালা গুলি বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সবটা কেবলই স্মৃতি। এই গ্রামেরই শিল্পী ভান্ডারু দেবশর্মা পুরোনো দিনের কথা বলতে গিয়ে বলেন, একটা সময় ছিল যখন এই গ্রামের শিল্পীরা একত্রিত হয়ে নিজেরাই কাঠের পুতুল তৈরি করে পুতুল নাচ দেখাতাম। মানুষ তাতে আনন্দ পেত। কিন্তু আজ আর সেই দিন নেই। শুধু রয়ে গেছে কাঠের সেই পুতুলগুলি।
advertisement
এই শিল্পীরা মনে করেন পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এবং ঘরে ঘরে টেলিভিশন এসে যাওয়াতেই পুতুল নাচের অস্তিত্ব সংকট শুরু হয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা রুটি রুজির তাগিদে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকেছেন। উত্তর দিনাজপুরের এই বিখ্যাত গ্রামের অপর এক পুতুল নাচ শিল্পী বাবুল সরকার জানান, একটা সময় তাঁদের এই পুতুল নাচ এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল যে রাশিয়াতে যাওয়ার আমন্ত্রণ পর্যন্ত পেয়েছিলেন। কিন্তু তখন বাড়ির মানুষেরা এতটা দূরে তাদের যেতে না দেওয়ায় তাদের যাওয়া হয়নি। শিল্পীদের বিশ্বাস এখনও, যদি সরকার বালাস গ্রামের পুতুল নাচকে জনসম্মুখে হাজির করে, এই সংস্কৃতিকে বাঁচাতে চায় তাহলে এখানকার শিল্পীরা তৈরি আছেন। শিল্পীদের আক্ষেপ, সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিকে বাঁচাতে নানান ধরনের চেষ্টা করেলেও তাঁদের জন্য কেউ ভাবেনি।
পিয়া গুপ্তা