আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৭.৮২ লক্ষ মেট্রিক টন পাট উৎপাদন হয় যা বিশ্বে মোট পাট উৎপাদনের নিরিখে ৫৫.৬৮ শতাংশ। তবে সঠিক পদ্ধতিতে কীভাবে এই অর্থকরী ও তন্তু ফসল উৎপাদন করতে হবে তা অনেকেই জানেন না।
আরও পড়ুন ঃ গাছে ঝুলছে ওটা কী? রক্তে ভাসছে এলাকা! ইসলামপুরে ভয়ঙ্কর কাণ্ড
advertisement
সাধারণত পশ্চিমবঙ্গে দুটি শ্রেণির পাটের চাষ হয়। মিঠা পাট বা বগীপাট অন্যদিকে তিতা পাট বা নালি পাট। এর মধ্যে তেতো পাট কেবল শাক খাওয়ার জন্যই চাষ করা হয় যাতে সেলুলোজের মাত্রা কম থাকে। এই তেতো পাতা সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
আর মিষ্টি বা মুনিয়া প্রজাতির পাট সাধারণত পাটের আঁশ এর জন্য চাষ করা হয় যাতে সেলুলোজের মাত্রা বেশি থাকায় হজমে অসুবিধা হয় আর স্বাদও তুলনামূলক ভাবে কম। উত্তর দিনাজপুর জেলায় রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদের বেশ কিছু জায়গায় ইদানিং এই তেতো পাট চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
এই তেতো জাতের কিছু পাট চাষ করে ভালো লাভবান হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। এই তিতা পাট এর জাত গুলি হলো সবুজ সােনা – J. R. C. 212 ( মার্চ ও এপ্রিল মাস বপন ও জুলাই মাসে সংগ্রহ), সােনালি – J. R. C. 321 (ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসে বপন ও জুলাই মাসে সংগ্রহ) , শ্যামলি J. R. C. 7447।
আরও পড়ুন: বুধে চেক দেবেন মুখ্যমন্ত্রী, ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবার মঙ্গলবারই কলকাতায়
এই তেতো বা নালী পাট সাধারণত শাক পাতা খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই তেতো পাট গাছ উচ্চতায় ছোট হয় এর কান্ড পরিধি ছোট হয়। এই তেতো পাট শাকের ফলন কম হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে এই তেতো পাট চাষ হয় না। তবে কিছু নিয়ম অবলম্বন করল এই পাট চাষ করলে ভালো লাভবান হওয়া যায়।
কিভাবে তেতো পাট চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে? এই ব্যাপারে কৃষক উদয় দেবশর্মা জানান তেতো পাট সাধারণত সব ধরনের মাটিতে হয়ে থাকে। মার্চ থেকে মে মাসে পাটের বীজ বপন করা হয়। বীজ বপণের আগে জমিতে গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ও ছাই ছিটিয়ে নিলে ভালো ফলন হয়।
বীজ বপনের পর কোদাল দিয়ে পুরো মাটি সমান করে নেওয়া হয়। বীজ বপনের চার থেকে পাঁচ দিন পর চারা হয়ে যায়। তারপর থেকেই জমিতে আগাছা জমলে সেটা নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। এই পাট বীজ বপনের দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পাট শাক জমি থেকে তুলে নেওয়া হয়।
উদয় দেব শর্মা জানান এই তেতো পাট ভীষণ উপকারী। তাই সঠিকভাবে এটি চাষ করতে পারলে ভালো ফলন ও মুনাফা হতে পারে। জানা যায় এই তেতো পাট শাক বহু গুণে সমৃদ্ধ। এই তেতো পাট একদিকে যেমন হজমের সাহায্য করে তেমনি খাবারের রুচি ও বাড়ায়।
পিয়া গুপ্তা