রীতিমত ভয়ে কাঁটা ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা নোয়াহাতু বিটের পাহাড়তলি গ্রামগুলির বাসিন্দারা। আর ভয় পাবে না-ই বা কেন, ‘হোম রেঞ্জ’ বাড়াচ্ছে পুরুলিয়ার কোটশিলা বনাঞ্চলে থাকা চিতাবাঘ। শিমনি বিট থেকে ওই চিতাবাঘ ঢুকে পড়েছে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া নোয়াহাতু বিটের তাহেরবেড়া গ্রামে। যেন সন্ধ্যাতেই রাত নামছে ওই এলাকায়। সন্ধের পরে শৌচকর্মের জন্য ঘর থেকে বেরলেই গ্রামবাসীদের হাতে থাকছে টর্চ ও ধারালো অস্ত্র।
advertisement
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তাহেরবেড়া গ্রামে হানা দেয় ওই চিতাবাঘ। বৃষ্টিতে মাটি ভিজে থাকার কারণে চিতাবাঘের পায়ের ছাপ স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় সমস্ত জায়গাতেই। এখনও পর্যন্ত সেই পায়ের ছাপ স্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে খিরকি পাহাড়ে যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গাতে। আর সেই পায়ের ছাপ স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। এ বিষয়ে গ্রামবাসীরা বলেন, রাত বিরেতে শৌচকর্মের জন্য তাদেরকে বাড়ির বাইরে যেতে হয়। তারা এতটাই ভয়ের মধ্যে রয়েছে যে হাতে ধারালো অস্ত্র ও টর্চ নিয়ে বেরচ্ছেন সন্ধ্যার পর থেকে। ভীষণই আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে তাদের। কোটশিলা বনাঞ্চলে চিতাবাঘের পায়ের ছাপে স্পষ্ট।
এই ধরনের বন্যপ্রাণের ‘টেরিটোরিয়াল’ ও ‘হোম রেঞ্জ’ থাকে। ‘টেরিটোরিয়াল রেঞ্জ’ বলতে যা বোঝায়, তা হল যে এলাকায় বসবাস সেখানে তার সমতূল্য কোনও বন্যপ্রাণকে আসতে দেয় না। ‘হোম রেঞ্জ’ এলাকায় সে শিকার করে। ফলে ওই চিতাবাঘ সিমনি বিট থেকে লাগোয়া নোয়াহাতু বিটে এসে শিকারের পরিধিস্থল বাড়াচ্ছে না তো? শুধু তা-ই নয়, পরিধিস্থল বাড়াতে গিয়ে পূর্ণবয়স্ক মাদি চিতাবাঘ সাব অ্যাডাল্টকে কি শিকারে অভ্যাস করাচ্ছে? এই প্রশ্নগুলো থেকেই যাচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে বিশেষ কোনও তথ্য মেলেনি বনদফতরের পক্ষ থেকে। আতঙ্কের মধ্য দিয়েই দিন কাটাচ্ছেন তাহেরবেড়া গ্রামের বাসিন্দারা।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি