TRENDING:

Success Story: মা পেশায় রাঁধুনি, তাঁর আশৈশব দৃষ্টিহীন সন্তান অভাবকে সঙ্গী করেই গবেষণা করছেন ভারতীয় বিদেশনীতি নিয়ে

Last Updated:

Success Story: অনুপের দু’চোখে দৃষ্টি না থাকলেও মনে রয়েছে অদম্য জেদ ! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র অনুপ তার লক্ষ্যে অনড়

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
রাহী হালদার, হুগলি: হুগলির গৌরহাটির বছর ২৮-এর অনুপ দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন জীবনের সকল প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে ভারতীয় বিদেশনীতি নিয়ে গবেষণা করা যায়। অনুপের দু’চোখে দৃষ্টি না থাকলেও মনে রয়েছে অদম্য জেদ ! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র অনুপ তার লক্ষ্যে অনড়।
advertisement

বয়স তখন তাঁর মাত্র নয় মাস। রোগে আক্রান্ত হয়ে দুটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। প্রথমে বাঁ চোখ ও পরে ডান চোখের উপরে প্রভাব পড়ে। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেও তার দৃষ্টিশক্তি ফেরানো যায়নি। তবে তাতেও থেমে থাকেনি। নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে পড়াশোনায় একের পর এক সাফল্য এনেছে। বর্তমানে GRF অর্থাৎ জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ নিয়ে পড়াশোনা করছে। আগামী জানুয়ারি মাসের ১ থেকে ১৯ তারিখে তাঁর পরীক্ষা। এখন চলছে তারই প্রস্তুতি।

advertisement

আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হলেও স্বামী পরিত্যক্তা গীতা সিং ২০০১ সালে সন্তানদের হাত ধরে চলে আসেন হুগলিতে। বর্তমানে গৌরহাটিতে এক চিলতে টালির বাড়িতেই দুই সন্তানকে নিয়েই থাকেন গীতা। তাঁর দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ছেলে কম্পিউটার নিয়ে পড়াশোনা করছে। বড় ছেলে অনুপ ছোট থেকেই দৃষ্টিহীন। তাঁকে পড়াশোনা শেখাতে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে হয় তাঁকে।

advertisement

আরও পড়ুন : নদীর পাশে নিরিবিলি বনে ঝিঁঝিপোকার ডাক, মনোরম শীতে নামমাত্র খরচে আসুন কলকাতার কাছেই ‘মিনি ডুয়ার্সে’

হুগলিতে আসার পরে সেখানে শ্রীদাম সাহার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি শ্রীরামপুর সেবা কেন্দ্র ও আই ব্যাঙ্কের কর্মী। সেখানেই অনুপকে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে দেখে জানিয়ে দেন তাঁর চোখের দৃষ্টি ফেরানো অসম্ভব। তখন অনুপকে উত্তরপাড়া ব্লাইন্ড স্কুলে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন শ্রীদাম। সেখানে অষ্টম শ্রেণী পাশ করার পর ২০১৪ সালে ক্যালকাটা ব্লাইন্ড স্কুলে ভর্তি হন অনুপ।

advertisement

সেখান থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১৯ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে স্নাতকোত্তর করেন। M.A পড়ার সময় স্কলারশিপও পেয়েছিল। বিএড এর জন্য রবীন্দ্রভারতীতে আবেদন করেছে অনুপ। বর্তমানে জিআরএফ অর্থাৎ জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার সঙ্গে কম্পিউটার ও সিন্থেসাইজার বাজাতেও পারদর্শী অনুপ।

advertisement

তিনি বলেন, ‘‘চোখের জন্য একবার হায়দরাবাদে অপারেশন করেছিলাম।, কিন্তু ডাক্তার জানিয়ে দেন নার্ভ শুকিয়ে গিয়েছে, তাই আর দৃষ্টি ফিরে পাওয়া যাবে না। তা নিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে যাই। পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে মাস্টার্স করেছি। ২০২৪ সালের নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। বর্তমানে ভারতের বিদেশনীতি নিয়ে পড়াশোনা করছি। জিআরএফ পেলে স্কলারশিপ পেতেও সুবিধা হবে। তবে আমার পড়াশোনার জন্য রেকর্ডিং মেশিন কিনতে হয়েছে। ২৩৮ পাতার বই ৩২ জিবি পেনড্রাইভে লোড করা আছে । এছাড়া পড়াশোনার জন্য অ্যাপ ব্যবহার করি ও মাঝেমধ্যে ইউটিউব থেকেও পড়াশোনা করি। মা আমাকে অনেক সাহায্য করেন। তার সঙ্গে শ্রীদাম মামাও আমাকে অনেক সাহায্য করেন । আবার কখনও বন্ধুদের থেকেও সাহায্য নিই। ভবিষ্যতে অধ্যাপক হবার ইচ্ছা রয়েছে।’’

অনুপের মা গীতার সিং বলেন, ‘‘রান্নার কাজ করে ছেলেকে পড়াশোনা শিখিয়েছি। ছেলেকে পড়ানোর জন্য ৮০ হাজার টাকা লোন নিয়েছি। এর পর আরও দরকার। তবে শ্রীদামদাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। তিনি যদি না থাকতেন, আমার ছেলে এই জায়গায় পৌঁছতে পারত না।’’

আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

শ্রীদাম সাহা বলেন, ‘‘ওকে আমি ব্লাইন্ড স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। তবে ওর যে চোখের সমস্যা রয়েছে, তাও অনেক জায়গায় দেখানো হয়েছিল কিন্তু তার চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পারেনি। এটা আমার একটা আক্ষেপ। পড়াশুনায় খুব ভাল, আগামী দিনে আরও বড় হোক।’’

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Success Story: মা পেশায় রাঁধুনি, তাঁর আশৈশব দৃষ্টিহীন সন্তান অভাবকে সঙ্গী করেই গবেষণা করছেন ভারতীয় বিদেশনীতি নিয়ে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল