সময়টা ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি, তৎকালীন বাঁকুড়া শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নবীনচন্দ্র দত্ত স্বপ্নাদেশ পেয়ে দ্বারকেশ্বর নদী থেকে একটি শালগ্রাম শিলা উদ্ধার করেন। বাড়ির কাছেই সত্যপীর তলায় পুজো শুরু হয়। পরে ১৮৫৪ সাল নাগাদ ব্যবসার সূত্রে কলকাতা গিয়ে রানি রাসমনির তৈরি দক্ষিণেশ্বর মন্দির দেখে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। বাড়ি ফিরে তৎকালীন তালডাংরা রোড ও বাঁকুড়া বনপুকুর রোডের সংযোগস্থলে বর্তমান সময়ের রাসতলায় জায়গা কিনে শুরু করেন মন্দির তৈরির কাজ।
advertisement
১৮৫৫ সালের ২৩ নভেম্বর কার্তিক পূর্ণিমার দিন এক চালা দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অদলে সুদৃশ্য মন্দির তৈরি করে রাধা দামোদর চন্দ্র জিউর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে শুরু হয় পুজো। রাস মন্দিরের নাম অনুসারে এলাকার নামকরণ হয় রাসতলা।
রাস উৎসব উপলক্ষে আলোক মালায় সেজেছে মন্দির। প্রথম দিন আদি রাসের দিন সন্ধ্যায় ঢাকঢোল সহযোগে নগর কীর্তণ পরিক্রমা। রাধা দামোদরচন্দ্রকে সত্যপীর তলার মূল মন্দির থেকে রাস মন্দিরে আনা হয়। পুজোপাঠ শেষে তাঁকে মূল মন্দিরে পৌঁছে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ মধ্যরাস দুপুরে নরনারায়ণ সেবার আয়োজন থাকে, সন্ধ্যায় মূল মন্দির থেকে রাধা দামোদরচন্দ্রকে রাস মন্দিরে এনে সন্ধ্যারতির পর ফের মূল মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
তৃতীয় অর্থাৎ শেষ অন্তরাস দিবসে প্রভূকে ৫১ ভোগ নিবেদন করা হয়। তিন দিন ধরে চলা রাস উৎসব উপলক্ষে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী প্রাচীন এই রাস মন্দির দর্শনে আসেন। উৎসবের দিনগুলি নানান ধরণের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় প্রাচীন রাস উৎসব উপলক্ষে।
