Taki History-Naming: ইছামতী নদীর 'ট্যাগ' থেকে ‘টাকি’! ব্রিটিশ আমলের বাণিজ্যকেন্দ্র থেকে পর্যটনস্বর্গ—টাকির দীর্ঘ পথচলা

টাকি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক সীমান্তবর্তী নদীতীরবর্তী শহর, যা ইছামতী নদীর সঙ্গে প্রাচীনকাল থেকে যুক্ত। সীমান্তের ছোট্ট এই শহর আজ পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল হলেও, এর নামকরণের ইতিহাস জড়িয়ে আছে এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ইছামতী নদীর ভাঙন ও গতিপথ পরিবর্তনের ফলে এখানে বিস্তৃত চড়াভূমি তৈরি হয়। স্থানীয়ভাবে এই চড়াভূমিকে ‘টেক’ বা ‘ট্যাগ’ বলা হতো—নদীর কোণাভাগে গড় হওয়া অংশের নামে। সেই ‘ট্যাগ’ বা ‘ট্যক’ শব্দ থেকেই ‘টাকি’ নামের উৎপত্তি হতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন।

নদীর কণ্ঠ বা বাঁকে গলিয়ে যাওয়া অংশ-“নদীর পকেট”-রূপ সেই জায়গাটিকে ‘ট্যাগ’ বলা হতো। সেখান থেকেই নামটির রূপান্তর ঘটেছে—‘ট্যাগ’ থেকে রূপান্তরিত শব্দটি ‘টাকি’ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি স্মরণ করা হয়।

টাকি শুধু ভূ-প্রকৃতির বিন্যাসেই নয়, বরং একসময় জমিদার-বাড়ি ও রাজবাড়ির সংস্পর্শে ছিল। যেমন ‘রাজবাড়ি’, ‘মুনশি বাড়ি’-র মতো স্থাপনা এখানে দেখা মেলে। শহরের নামকরণের ভৌগোলিক ব্যাখ্যার পাশাপাশি এই সামাজিক-ঐতিহ্যও নামটিকে বিশেষ করে তুলে ধরে।

ব্রিটিশ শাসনকালে টাকি নদীর পাড়ে বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছিল। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন সময় অতিবাহিত করার জন্য এখানে ব্রিটিশ প্রশাসক-জমিদাররা আসতেন। এসব কারণে এই নামধারার জায়গাটি শুধু ভূ-সংক্রান্ত নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে টাকি শুধু একটি ঐতিহাসিক শহর নয়, বরং এক জনপ্রিয় ভ্রমণকেন্দ্র, যেখানে প্রতি বছর হাজারো পর্যটক আসেন ইছামতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং শহরের নামকরণের পেছনের সেই ইতিহাসের ছোঁয়া অনুভব করতে।