স্বাধীনতা আন্দোলনে কাটোয়া মহকুমা থেকে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলন থেকে শুরু করে, আইন অমান্য আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও তাঁর বড় অবদান রয়েছে। জানা যায়, বাংলার বিভিন্ন বিপ্লবী প্রতিষ্ঠান এবং বিপ্লবীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ডক্টর গুণেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের।
আরও পড়ুন: এমনও সম্ভব! আজীবন কারাবাসের সাজা পেয়ে জেলে ঢুকেই যা বলল সঞ্জয়, চোখ কপালে উঠল সকলের
advertisement
সেরকমই বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশাপাশি গুণেন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর। আর এই গুণেন্দ্রনাথ বাবুর বাড়িতেই এসেছিলেন নেতাজি। গুণেন্দ্রনাথ বাবুর নাতি রঘুনাথ মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের ২৯, ৩০ এবং ৩১ এই তিনটে দিন নেতাজি কাটোয়াতে ছিলেন। এটা যে সময়কার ঘটনা তখন আমার জন্ম হয়নি। আমরাও শুনেছি , বইয়ে বিভিন্ন লেখা পড়েছি যে নেতাজি সেই সময় আমাদের বাড়িতেই আতিথেয়তা গ্রহণ করেছিলেন। আমার ঠাকুমা রান্নাবান্না করতেন এবং সেই খাবার তিনি গ্রহণ করেছিলেন বলে আমরা জানি। আমাদের বাড়িতে বৈঠকখানায় একটা ইজি চেয়ার থাকত। নেতাজি নিশ্চয়ই বৈঠকখানার ওই ইজি চেয়ার ব্যবহার করেছিলেন। এবং সেই টেবিলও এখনওআছে যে টেবিল তাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল।”
আরও পড়ুন: আরামে জেলে থাকা? সঞ্জয়কে দিয়ে এবার যে কাজ করানো হবে, শুনে গা ঘিনঘিন করবে! কী কাজ জানেন?
বর্ধমানের কাটোয়ার এই গুণেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে এখনও রয়েছে নেতাজির ব্যবহার করা ইজিচেয়ার এবং ছোট্ট একটি টেবিল। জানা যায়, গুণেন্দ্রনাথবাবুর বাড়ির একদম সামনেই দোতলায় ছিল তাঁর বৈঠক খানা। সেখানেই তিনি বিভিন্ন মিটিং করতেন। বহু মানুষের যাতায়াত ছিল সেখানে। তবে গুণীবাবুর বৈঠক খানায় প্রবেশ করতে গেলে লোহার বাঁকানো সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতে হত। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যখন কাটোয়া এসেছিলেন তখন তিনিও এই লোহার সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে গুণী বাবুর বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন।
আজও কাটোয়া শহরের গুণেন্দ্রনাথবাবুর বাড়িতে সেই সাবেকি লোহার সিঁড়ি রয়েছে। জানা যায়, নেতাজি গুণেন্দ্রনাথবাবুকে মাঝে মধ্যেই চিঠি লিখতেন। তারই মধ্যে নেতাজির লেখা এবং তাঁর সাক্ষরিত একটি চিঠি এখনও গুণেন্দ্রনাথ বাবুর বাড়িতে রয়েছে। তাঁর বংশধরেরা সেই চিঠি এখনও রেখে দিয়েছেন স্বযত্নে। সব মিলিয়ে আজও নেতাজির স্মৃতি বহন করে কাটোয়ার বারোয়ারীতলার গুণীবাবুর বাড়ি।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী