সেরকমই একটি মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকে শুরু হয় রাজবাড়ির প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজো। তৎকালীন রাণী জানকি দেবী এই পুজোর প্রবর্তন করেছিলেন। ইতিহাস বিজড়িত পুজোকে ঘিরে রয়েছে নানান রূপকথার গল্প। রাজবাড়ির কূলদেবতা যেহেতু মদন গোপাল জিউ। তাই বৈষ্ণব মতে হয় দুর্গাপুজো। আগে সন্ধিপুজোর সময় কামান দেগে এলাকার মানুষজনদের জানান দেওয়া হত, রাজবাড়ির সন্ধিপুজো শুরু হতে চলেছে।
advertisement
আরও পড়ুন : এক চোখেই জীবনের লড়াই! ৮২ বছরেও শোলার শিল্পে মুগ্ধ করছেন রবীন্দ্রনাথ
সরকার বাহাদুর কামান দাগা বন্ধ করে। সেই থেকে কামান দাগা বন্ধ। পুজোয় প্রথা রক্ষা করা হচ্ছে আতসবাজির আওয়াজে। পুজোর সময় বর্তমানেও নিয়ম মেনে মায়ের পায়ে রাখা হয় রাজপরিবারের সব তলোয়ার-অস্ত্রশস্ত্র। বার্তা একটাই, “যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।” রাজপরিবারের সদস্য সূর্য প্রসাদ গর্গ বলেন, দীর্ঘদিন যাঁরা প্রতিমা তৈরি করেন, তারা এ বছর প্রতিমা তৈরি করছেন। আটচালায় প্রতিমার টানা টানা চোখ। যা অন্যান্য প্রতিমার চেয়ে ভিন্ন। আগে সপ্তমীর দিন ৭ মন, অষ্টমীর দিন ৮ মন, নবমীতে ৯ মন চালের ভোগ চালের ভোগ তৈরি করা হত। তবে বর্তমানে প্রতিদিন তা হয় না। কিন্তু ভোগের খাওয়া দাওয়ার রীতি মেনে চলে এই পরিবার।
আরও পড়ুন : যশোর রোডে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, বাসের তলায় প্রাণ গেল স্কুটি চালকের! দোষ কার? যা বলছেন বাসিন্দারা
সন্ধিপুজোয় একসময় উত্তরাখণ্ড থেকে আসত ১০৮টি নীলপদ্ম। এখন একটি নীলপদ্মের সঙ্গে সাদা পদ্ম দিয়ে নিয়ম রক্ষা করা হয়। জাঁকজমক কমলেও নিষ্ঠাভরে পুজো হয় এই রাজবাড়িতে। রাজবাড়ির মহিলা সদস্যারা আগে পর্দার আড়ালে থাকতেন। সিঁদুর খেলায় সকলের সাথে অংশ নিতে পারতেন না। এখন তা তুলে দেওয়া হয়েছে। সকলের সঙ্গেই সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন রাজবাড়ির সদস্যারা। এই দুর্গাপুজোর নিয়ম ছিল রাজ পরিবারের সদস্য সদস্যারা আগে পুষ্পাঞ্জলি দেবেন, তারপর এলাকার মানুষজনরা পুষ্পাঞ্জলি দিতেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এখন সেটাও তুলে দেওয়া হয়েছে। শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বিজয়া দশমীর দিন হিজলি টাইটাল খালে বিসর্জন দেওয়া হত প্রতিমা। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। রাজবাড়ির দিঘিতে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। পুজোর জৌলুস হারিয়েছে, আগের মত এখন আর জাঁকজমক পূর্ণভাবে না হলেও ঐতিহ্য মেনে রাজবাড়ির পুজো হয়ে আসছে। পুজোর ক’টাদিন রাজ বাড়ির মা দুর্গার দর্শন করতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে।