সন্ধ্যা নামতেই শহরের রাজপথে ভিড় উপচে পড়ে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের ঢল নামে কৃষ্ণনগরের রাস্তায়। রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে লক্ষাধিক মানুষ উপভোগ করেন এই রঙিন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ভরপুর শোভাযাত্রা। সারা রাত জুড়ে চলে এই উৎসবের আবহ—ঢাকের তালে, আলোর ঝলকে আর ভক্তির আবেশে মাতোয়ারা থাকে কৃষ্ণনগর।
advertisement
শহরের বিখ্যাত বুড়িমা, ছোটমা, বাঘাডাঙ্গা, নুড়িপাড়া, মালোপাড়া, গোলাপট্টি-সহ একাধিক বারোয়ারি প্রতিমা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে। কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হল ‘সাঙ’ প্রথা—যেখানে প্রতিমাকে বাঁশের মাচায় বেঁধে বেহারারা কাঁধে তুলে পুজো মণ্ডপ থেকে গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যান। এই প্রাচীন প্রথা আজও শহরের ঐতিহ্যকে জীবিত রাখছে।
তবে এবছরের শোভাযাত্রার বিশেষ আকর্ষণ ছিল ঘূর্ণি হালদারপাড়া বারোয়ারি। তারা প্রথাগত পুরুষ বেহারাদের পরিবর্তে পাড়ার মহিলাদের কাঁধে প্রতিমা বহনের দায়িত্ব দেয়। নারীশক্তির এই অসামান্য দৃষ্টান্ত দেখে অভিভূত শহরবাসী। শোভাযাত্রার পথে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সবাই তাদের অভিনন্দন জানায়।
এইভাবে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো আবারও প্রমাণ করল—ঐতিহ্য, ভক্তি ও সামাজিক পরিবর্তনের এক অপূর্ব মেলবন্ধনই এই শহরের প্রাণ।





