১০ ফেব্রুয়ারির সকালটা এ জীবনে ভুলবেন না টাইগার কুইক রেসপন্স টিমের সদস্য গণেশবাবু। করমচা বাগান লাগোয়া ধান খেতে কাজ করছিলেন ভগীরথ মণ্ডল নামে এক বয়স্ক গ্রামবাসী। বনকর্মীরা গ্রামে ঢুকে পড়া বাঘটিকে খুঁজছিলেন। হঠাৎ চোকে পড়ে বাঘ বাগান থেকে বেরিয়ে ভগীরথকে আক্রমণ করতে উদ্যত। বাঘ দেখে আতঙ্কে গাছে উঠে পড়েন বৃদ্ধ। আর গণেশ লাঠি নিয়ে বাঘকে আটকাতে যান। প্রায় বিদ্যুতের গতিতে বিশাল প্রাণীটি এক লাফে গণেশের উপর ঝাঁপায়। মুখের ডানদিকে থাবা মারে। তারপর আবার থাবা। অন্যান্য বনকর্মীরা তখন লাঠি নিয়ে তেড়ে আসেন। একটানা লাঠির আঘাতে প্রাণীটি শিকার ছেড়ে পিছু হটে। মৈপীঠের নগেনাবাদের শ্মশান ঘাট এলাকা সেদিন কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল।
advertisement
হাসপাতাল থেকে অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন গনেশ। তাঁর তিন মেয়ে। একজন দশম শ্রেণিতে পড়ছে। কী করে তার পড়াশোনা বা সংসারের খরচ চালাবেন এখন সেই চিন্তায় দিশাহারা। বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ এখনও পাইনি। শরীরের যা অবস্থা কাজও করতে পারছি না। জানি না কি করে সংসার চলবে। লোকালয়ে বাঘ ঢুকলে দিন-রাত ডিউটি করলে বনদফতর এক হাজার টাকা দেয়। এছাড়া মাছ-কাঁকড়া ধরে কিছু টাকা আয় হয়। সে সামান্য টাকা থেকে জমিয়ে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এখন মাছ-কাঁকড়া ধরতেও যেতে পারব না। কবে সুস্থ হব জানি না। হাঁটাহাঁটি বেশি হলে শরীর খারাপ হয়। পরিবারের কেউ সরকারি চাকরি পেলে তবেই সংসার বাঁচবে। মেয়ে পড়াশোনা করতে পারবে।’ স্ত্রী বৃহস্পতি শ্যামল বলেন, ‘স্বামী বেঁচে ফিরেছে কপাল জোরে। ছোট মেয়েকে সবে স্কুলে ভর্তি করেছি। আর এক মেয়েও পড়াশোনা করছে। স্বামীর এই অবস্থাতে কী করে কী হবে জানি না।’