প্রাকৃতিক দুর্যোগের এমন ভয়াবহ রূপ দীর্ঘদিন দেখা যায়নি- মানুষ, গবাদিপশু, ঘরবাড়ি, চাষের জমি, যোগাযোগ ব্যবস্থা সবই ছিল কার্যত অচল। সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে চলছিল বেঁচে থাকার লড়াই। ঘাটাল পৌর এলাকা থেকে শুরু করে ঘাটাল ব্লকের বহু গ্রাম- সব জায়গাতেই জলমগ্ন অবস্থায় জীবন কাটাতে হয়েছে স্থানীয়দের।
আরও পড়ুনঃ বাকবিতণ্ডার মাঝেই হঠাৎ…! জনতার হাতে মার খেলেন জনপ্রতিনিধি, বেনজির কাণ্ড রাজ্যে
advertisement
রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত রান্না করা খাবার সরবরাহ, শুকনো খাবার বিতরণ, ওষুধ এবং মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু রাখা হয়েছিল। প্রশাসনের তরফে বহু দুর্গত এলাকায় নৌকো করে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।অবশেষে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় স্বস্তি ফিরছে ঘাটালে।
গত কয়েকদিনে আবহাওয়ার উন্নতির ফলে ধীরে ধীরে জল নামতে শুরু করেছে। বিশেষত ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়কের আরগোড়া চাতাল এলাকা, যেটি একসময় পুরোপুরি জলের তলায় ছিল, সেখানেও জলস্তর কমেছে। যদিও এখনও কিছু এলাকায় নৌকো চলাচল চালু রয়েছে, তবে স্পষ্টভাবেই পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বছর ঘুরলেই ভোট, তার আগে মেদিনীপুরে ধরা পড়ল ভুয়ো ভোটার! কী বলছে তৃণমূল-বিজেপি?
পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট এখনও কিছুটা জলের নীচে, কিন্তু ধীরে ধীরে সেখানেও জলের পরিমাণ কমছে। শহর ও ব্লকের বহু জায়গায় জল সরে যাওয়ায় লোকজন নিজেদের ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। আধিকারিকদের মতে, আর কয়েকদিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। জলস্তর কমার এই ধারা বজায় থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ঘাটাল পুরোপুরি জলমুক্ত হবে বলে আশাবাদী প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, যতক্ষণ না পুরো এলাকা জলমুক্ত হচ্ছে, ততক্ষণ প্রশাসনিক নজরদারি ও সাহায্য জারি থাকবে। প্রত্যেকটি গ্রাম, প্রত্যেকটি পয়েন্টে খতিয়ে দেখা হচ্ছে পরিস্থিতি।সেই সঙ্গে সতর্কতাও জারি রয়েছে- যাতে হঠাৎ করে কোনও নতুন আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতি তৈরি না হয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এদিকে জল কমার সঙ্গে সঙ্গে নানারকম রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে, তাই মেডিক্যাল ক্যাম্প ও জরুরি পরিষেবা সচল রাখা হয়েছে। মানুষের মুখে দেখা যাচ্ছে খানিক আশার আলো। যদিও বহু মানুষ এখনও কষ্টের মধ্যেই আছেন। এই দীর্ঘ সময় ধরে যারা বন্যার কবলে পড়েছিলেন, তাঁদের জন্য এটা যেন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখা। জলযন্ত্রণার ভয়াবহ দিনগুলির কথা খুব সহজে ভুলে যেতে পারবেন কি না তা জানা নেই, কিন্তু ঘাটালবাসী এখন চায়- এই যন্ত্রণার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।