বিয়ের মরশুমে সত্যিই তাঁতের শাড়ির ব্যাপক চাহিদা থাকত। তাঁতশিল্পী সুশান্ত বাবুর কথায়, অনেকসময় বেনারসি শাড়ির বদলে, তাঁতের জামদানি পরেই বিয়ের পিড়িতে বসত কণে। সেসময় রাত দিন পরিশ্রম করে তাঁতের শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন তাঁত শিল্পীরা। কে কত ভাল নকশার শাড়ি তৈরি করতে পারেন সেই নিয়ে রীতিমত যেন প্রতিযোগিতা চলতশিল্পীদের মধ্যে। বিয়ের মরশুমে দূর দূরান্ত থেকেও শাড়ি তৈরির অর্ডার আসতো শিল্পীদের কাছে। তবে সেই ছবি বর্তমানে অনেকটা ফিকে হয়ে গিয়েছে। বর্তমান সময়ে সকলেই ঝুঁকছেন কম দামের আধুনিক শাড়ির দিকে।
advertisement
আরও পড়ুন : নাইট সাফারির সুযোগ দক্ষিণের ‘এই’ জায়গায়, কাপল ফ্রেন্ডলি রিসর্টও পাবেন, বড়দিনে ঘুরে আসুন
তাঁতের শাড়ি বা জামদানির যে ঐতিহ্য সেটা ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে হাতেগোনা কিছু তাঁতি রয়েছেন যারা এখনও তাঁতের শাড়ি তৈরি করেন। তাঁত শিল্পী সুশান্ত দে জানিয়েছেন, “বাইরের শাড়ি এসে আমাদের বাজার শেষ করে দিয়েছে। যেমন সুরাটের শাড়ির কাজ বেশি দাম কম। সবাই ওটাই কিনছেন। কিন্তু জামদানি যে ঐতিহ্য এবং পরে যা আরাম সেটা সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। আগে বিয়ের অনুষ্ঠানে উপহার দেওয়ার জন্য বা কোনেকে পরানোর জন্য তাঁতের শাড়িই ব্যবহার করা হত।”
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন“
তাঁত শিল্পীদের কথায়, কম দামের সুরাটের শাড়ির কারণে এবং পাওয়ার লুমের জন্যই বাংলার তাঁতের এই অবস্থা। এখন আর বিয়ের মরশুমে তাঁতের শাড়ির আগের মত কদর থাকেনা। সেই জায়গা দখল করেছে কম দামের সুরাটের শাড়ি। ২৫-৩০ হাজারের জামদানিও এখন বিলুপ্তির পথে। শাড়ির সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে শিল্পীদের প্রতিভা। শাড়ি প্রস্তুতকারী দক্ষ শিল্পীদের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। হয়তো আরও বেশ কয়েকবছর পর একরকম বিলুপ্ত হয়ে যাবে তাঁতের শাড়ি। শিল্পীরাও রোজগারের তাগিদে খুঁজে নেবেন বিকল্প রাস্তা।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী