পুজোর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁসার থালা, বাটি, ঘটি, গ্লাস, প্রদীপসহ নানা সরঞ্জামের অর্ডারে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফিরেছে, আবার শিশুদের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনা হবে। কল্যাণপুর গ্রামে প্রায় শতাধিক পরিবার কাঁসার কাজে যুক্ত। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই পেশার সঙ্গে জড়িত শিল্পীরা। বছরের বেশিরভাগ সময় খুব কম চাহিদা থাকে। বাজারে প্লাস্টিক ও স্টিলের সামগ্রী সহজলভ্য হওয়ায় কাঁসার জিনিসের কদর আগের মত নেই।
advertisement
আরও পড়ুন : বৃষ্টির দাপটে টালমাটাল কুমোরটুলি, শিল্পীদের ঘুম উড়েছে! দুর্গাপুজোয় কী বড় ধাক্কা?
কিন্তু পুজোর সময়ে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের আলাদা চাহিদা দেখা দেয়। দেবদেবীর পুজো থেকে শুরু করে ঘরোয়া আচার-অনুষ্ঠান পর্যন্ত কাঁসার সরঞ্জাম ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই দুর্গোৎসবের আগে থেকেই বিভিন্ন গ্রাম ও শহর থেকে অর্ডার আসতে থাকে। বর্তমানে শিল্পীরা সকাল থেকে রাত অবধি একটানা কাজ করে চলেছেন। কেউ নতুন সরঞ্জাম গড়ছেন, কেউ আবার পুরোনো কাঁসার সামগ্রী পালিশ ও মেরামতের কাজ করছেন।
আরও পড়ুন : সমুদ্রের তাণ্ডব ঠেকাতে ব্ল্যাকস্টোনের ঢাল! বাঁধ শক্ত করতে মরিয়া সেচ দফতর
বাড়ি বাড়ি বায়না আসছে, ফলে হাতে কাজের চাপ এতটাই বেড়েছে যে অনেকেই খাওয়া-দাওয়া ভুলে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শিল্পীরা জানান, বছরের এই সময়টাই আসল আয়ের সময়। একেকজন শিল্পীর হাতে একাধিক অর্ডার জমে থাকায় সবাই দিনরাত এক করে কাজ করছেন। পুজোর বায়না বেশি হওয়ায় এ বছর শিল্পীদের মুখে হাসি ফুটেছে। পরিবারের শিশুরা নতুন জামাকাপড় পাবে, ঘরে পুজোর দিনে ভাল খাবারের ব্যবস্থা হবে।
অনেকেই বলেছেন, দুর্গাপুজোর বায়না না থাকলে তাদের সংসার চালানো মুশকিল হত। তাই তারা এই ব্যস্ততাকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন। কল্যাণপুর গ্রামের কাঁসার শিল্পীদের জীবন সরাসরি জড়িয়ে আছে বাঙালির উৎসবের সঙ্গে। সারাবছর অনিশ্চয়তার অন্ধকারে থাকলেও দুর্গোৎসব যেন তাদের জীবনে আলো নিয়ে আসে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই সময়ের অর্ডার তাদের শুধু আর্থিক স্বস্তিই দেয় না, বরং আগামী দিনের জন্য নতুন উদ্যমও জোগায়। গ্রামীণ শিল্পীরা আশা করছেন, আধুনিকতার ভিড়েও কাঁসার ঐতিহ্য যেন টিকে থাকে এবং প্রতি বছর পুজোয় তাদের জীবনে এই রকম আনন্দ ও কর্মব্যস্ততা ফিরে আসে।





