শান্তিপুরের এই মৃৎশিল্পীর কারখানার নাম ‘শিল্পালয়’। এবছরও প্রচুর অর্ডার এসেছিল তাঁর কাছে। তবে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে সব অর্ডার গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। গৌড় পাল মূলত ছোট আকারের দুর্গা মূর্তি তৈরি করেন। বড় মূর্তি বানাতে তিনি খুব একটা আগ্রহী নন। কারণ, পেশাগতভাবে তিনি কুমোরটুলিতে কাজ করেন এবং সেখানেই দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ফলে বড় মূর্তি বানানোর জন্য বাড়তি সময় ব্যয় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয় না।
advertisement
আরও পড়ুন : চায়ের ব্যবসায়ী হয়েও আজ কিংবদন্তি! জীবিত মানুষ, অথচ সরকারি নথিতে তাঁর নামেই রাস্তা! আসল ঘটনা জানুন
এবছর গৌড় পাল মোট ৪০টি মূর্তি তৈরি করেছেন। এর মধ্যে আটটি ছোট মূর্তির অর্ডার নিয়েছেন, যা সবই চলে যাবে কুমোরটুলিতে। এর পাশাপাশি আরও ছোট ছাঁচের কয়েকটি মূর্তি তৈরি করেছেন, সেগুলিও কুমোরটুলিতেই পাঠানো হবে। মূর্তি পাঠানোর সময় প্রতিবারের মতো এবারও যথেষ্ট সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি প্রতিমা বিচলি দিয়ে ভালভাবে মুড়ে গাড়িতে তোলা হয়। যাতে কোনও ক্ষতি না হয়। অন্যান্য বছর আলাদা গাড়ির মাধ্যমে তিনি মূর্তি পাঠান, তবে এবছর যেহেতু সংখ্যা কিছুটা কম, তাই ক্রেতারা গাড়ি নিয়ে এসে মূর্তি সংগ্রহ করছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ইতিমধ্যেই কুমোরটুলিতে দুর্গা মূর্তির চোখ আঁকা শুরু হয়েছে। ফলে অচিরেই গৌড় পালকে সেখানকার কাজে যোগ দিতে হবে। যদিও পুজোর সময়ে একবার বাড়িতে আসবেন তিনি, কিন্তু তার পরপরই আবার ব্যস্ত হয়ে পড়বেন কালীপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোর মূর্তি তৈরির কাজে। জগদ্ধাত্রী ঠাকুরের কাজ শেষ হলে ফের তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন এবং শান্তিপুরের বিখ্যাত রাস উৎসব উপলক্ষে দু’-একটি বিশেষ অর্ডারের মূর্তি নিজ হাতে গড়ে তোলেন।
গৌড় পালের এই নিরলস পরিশ্রমে স্পষ্ট, বড় ঠাকুর নয়, ছোট মূর্তিই এখন শহর থেকে গ্রাম, এমনকি বিদেশের মাটিতেও দুর্গাপুজোর আবেগকে আরও সহজলভ্য করে তুলছে। ছোট মূর্তির বাড়তি চাহিদা একদিকে যেমন শিল্পীদের নতুন সম্ভাবনা এনে দিচ্ছে, তেমনই সাধারণ মানুষের কাছেও পূজা আয়োজনকে করে তুলছে আরও সহজ ও সুলভ। এই উপলক্ষে তারা আরও বেশ কিছু শিল্পী নিয়ে কুমারটুলিতে পৌঁছাতে চলেছেন। ফিরবেন সপ্তমীর দিন।