ভাকু মোড়ের ইতিহাস প্রায় ছয় দশক পুরোনো। আড়গাওয়াল পঞ্চায়েতের বাবুইদাড়ি, সিঞ্যারী ও বামুনবাড় — এই তিনটি গ্রামের সংযোগস্থলে একটি ছোট চায়ের দোকান খোলেন বাবুইদাড়ি গ্রামের কাঙ্গাল চন্দ্র দাস, যিনি এলাকাজুড়ে পরিচিত ছিলেন ‘ভাকু বাবু’ নামে। সেই সময় ওই তিন গ্রামের সংযোগস্থলে এটি ছিল একমাত্র চায়ের দোকান। সকাল-বিকেল স্থানীয় মানুষজন আড্ডা জমাতে ভিড় করতেন ভাকু বাবুর দোকানে। ধীরে ধীরে এই সংযোগস্থলই সবার মুখে মুখে পরিচিত হয় ‘ভাকু মোড়’ নামে।
advertisement
তবে এই চায়ের দোকান শুধুই আড্ডার জায়গা ছিল না—ছিল রাজনৈতিক সংঘর্ষের সাক্ষীও। ১৯৯৮ সাল থেকে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশক পর্যন্ত ভগবানপুরের অর্জুননগর দিক থেকে লাল বাহিনী ও আড়গাওয়াল দিক থেকে সবুজ বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বহুবার ঘটেছে ঠিক ভাকু বাবুর দোকানের সামনেই।
দুই পক্ষের রাজনৈতিক কর্মীরা এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ত এই তিন গ্রামের সংযোগস্থলে, যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল ভাকু বাবুর দোকান। বর্তমানে ভাকু বাবু আর বেঁচে নেই। তবে তাঁর ছেলেরাই এখন সেই ঐতিহ্যবাহী চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। ছয় দশক আগে যেখানে একমাত্র ভাকু বাবুর চায়ের দোকান ছিল, সেখানে আজ নানা ধরনের দোকানপাট, বাজার আর সন্ধ্যা হলেই তাসের আড্ডায় মুখর হয়ে ওঠে ভাকু মোড়। এখনো তিন গ্রামের মানুষ একত্রিত হন এখানেই।
যেখানে মনীষীদের নামে জায়গার নাম গড়ে ওঠে সেখানে একজন সাধারণ চাওয়ালার হাত ধরে ইতিহাস গড়ে উঠেছে পটাশপুরের ভাকু মোড়ে। এক সময় রক্তে রাঙা এই মোড় আজ শান্তি, মিলনস্থল আর স্মৃতির প্রতীক। ভাকু বাবু না থাকলেও, তাঁর চায়ের দোকান আর নাম আজও বেঁচে আছে মানুষের মনে।





