সেই প্রথম প্রচেষ্টা ছিল একখানা ব্লাউজে নকশা আঁকা। গ্রামের এক যুবকের অনুরোধে তিনি পরে একটি গেঞ্জিতে ডিজাইন করেন। এরপর সেই কাজের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। দুর্গাপুজোর সময় তিনটি অর্ডার পান, আর সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর সাফল্যের গল্প। আজ অনিতা শুধু নিজের জন্যই নয়, আরও পাঁচজনকে কাজ শেখাচ্ছেন, তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন স্বনির্ভরতার চাবিকাঠি। তিনি বলেন, প্রথমে ভাবিনি এতদূর এগোবো। কিন্তু খারাপ সময়টাই আমাকে এগিয়ে যেতে শিখিয়েছে।
advertisement
বর্তমানে অনিতার কাজের পরিধি বেশ বড়। তিনি শাড়ি, ব্লাউজ, পাঞ্জাবি, কুর্তি, বাচ্চাদের ফ্রক, ধুতি-পাঞ্জাবি সেট, লেহেঙ্গা, সবেতেই হাতের আঁকা নকশা করেন। এছাড়াও বিয়ের সামগ্রী, মণ্ডপের আলপনা, মেহেন্দি ও ওয়াল পেন্টিং-এর কাজও করেন সমান দক্ষতায়। অনিতার কাজের স্টার্টিং প্রাইস ৭০০ টাকা, যা নকশার ঘনত্ব ও কাপড়ের মান অনুযায়ী বাড়ে। বড়দের পোশাকের দাম ৮০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে নকশা অনুযায়ী ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকায় পৌঁছায়।
তিনি বলেন, ‘আমি কাপড়, রং, ডেলিভারি, সবকিছু নিজে করি। তাই একেকটা পাঞ্জাবিতে প্রায় ৫০০-৬০০ টাকার লাভ থাকে। কিন্তু এই কাজের আসল আনন্দ টাকা নয়, মানুষের মুখে ভাল লেগেছে কথাটা।’ অনিতা তাঁর সমস্ত অর্ডার নেন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। মানুষজন তাঁর পোস্ট দেখে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন, অনলাইন অ্যাডভান্স পেমেন্ট করেন, তারপর তিনি কাজ শুরু করেন। কাজ শেষ হলে তিনি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ডেলিভারি করেন সারাদেশে। আজ বোলপুর-শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটে-ও অনিতার তৈরি হাতের নকশা করা পোশাক বিক্রি হচ্ছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছেছে তাঁর সৃজন। সংসারে পূর্ণ সহায়তা না হলেও, অনিতা এখন নিজের সমস্ত খরচ নিজেই চালাতে পারেন। বাবা-মায়ের উপর নির্ভরতা নেই। তাঁর স্বপ্ন, আগামী দিনে আরও বড় জায়গায় পৌঁছনো।