এর আগে বর্ধমান জেলায় কাজ করার সময়, সেখানকার আদিবাদী শিশুদের স্কুলছুট আটকে জাতীয় পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পুরস্কার জিতলেন তিনি।স্কুল ছাত্রীদের নিয়ে কৃষ্ণেন্দুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সাল নাগাদ। তার কিছুদিন আগেই জয়নগর উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক হয়ে আসেন তিনি। কিছুদিন কুলতলি চক্রের স্কুল পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্বও সামলাতে হয়েছিল তাঁকে। কৃষ্ণেন্দু জানান, প্রত্যন্ত গ্রামীণ এইসব এলাকায় কাজ করতে গিয়ে ঋতুকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে ছাত্রীদের দুর্দশার ছবিটা সামনে থেকে দেখেন তিনি। স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার জানতেন না অনেকেই। জানলেও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েদের কাছে তা ব্যবহার করার তেমন সুযোগ ছিল না। সংক্রমণ-সহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হত। মাসের নির্দিষ্ট সময় স্কুলে আসত না অনেকেই। ক্ষতি হত পড়াশোনায়।
advertisement
আরও পড়ুন: ড্রাগনের সঙ্গে হচ্ছে স্ট্রবেরি! ছাদ বাগান ভরে উঠছে বিদেশি ফলে
ঋতুকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতাও ছিল না এলাকায়। নানা কুসংস্কার ঘিরে ছিল।এ সবের বিরুদ্ধেই লড়াই শুরু করেন কৃষ্ণেন্দু। প্রথমেই স্কুল ধরে ধরে সমস্ত ছাত্রীদের হাতে তুলে দেন স্যানিটারি ন্যাপকিন। কৃষ্ণেন্দুর দাবি, কয়েকবছর ধরে এলাকার প্রায় ২৫টি স্কুলের হাজারেরও বেশি ছাত্রীকে কয়েক হাজার স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই লকডাউনে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে স্কুল ছাত্রীদের ন্যাপকিন বিলি করেছেন কৃষ্ণেন্দু। সেই সময় স্কুল ছাত্রীদের পাশাপাশি বাড়ির অন্য মহিলাদের জন্যেও স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হয়। পাশাপাশি ঋতুকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজও চালিয়ে গিয়েছেন লাগাতার। এখনও কৃষ্ণেন্দুর উদ্যোগে স্কুলে এবং স্কুলের বাইরে নিয়মিত সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। নিয়মিত বিলি করা হচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিনও।
আরও পড়ুন: রাস্তার ধারে ব্যবসা করছেন? নির্দিষ্ট এই সরকারি কাগজ রয়েছে তো? না হলেই বড় বিপদ
কৃষ্ণেন্দু বলেন, “কাজ করতে গিয়ে সমস্যাগুলো চোখে পড়ে। সেগুলি সমাধানের লক্ষেই নতুন করে কাজ শুরু করি। এখনও নিয়মিত সেই কাজ চলছে। পুরস্কার পেতে পারি ভাবিনি। তবে যে কোনও সম্মানই উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়। আরও বেশি করে ছাত্র-ছাত্রীদের উপকারে কাজ করে যেতে চাই। আগামীদিনে জেলার অন্য এলাকাতেও এই কাজ ছড়িয়ে দেওয়া আমার লক্ষ্য। জাতীয় পুরস্কার কাজের উৎসাহ বাড়াবে বলেই মনে করেন কৃষ্ণেন্দু। তিনি জানান, তার কাজ প্রথমে জেলা পরে রাজ্য স্তরে স্বীকৃতি পায়। তারপরেই বিবেচিত হয় জাতীয় পুরস্কারের জন্য। এবার এই পুরস্কারের জন্য গোটা দেশ থেকে তিন হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছিল বলে জানান তিনি।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
এই রাজ্য থেকে ছ’জনকে বাছাই করে দিল্লি ডাকা হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে পুরস্কার জেতেন কৃষ্ণেন্দু।
সুমন সাহা