এর পর আত্মীয়দের বাড়ি ও পরে ক্লাবে, স্কুলে পুজো শুরু করেন। একজন মহিলাকে পুরোহিত হিসেবে দেখে মাঝেমধ্যেই অবাক হয়ে যান প্রচুর মানুষ। ছোটবেলায় বাড়িতে পিসির কাছ থেকে তিনি পুজোর নিয়ম পদ্ধতি শিখেছিলেন। এরপর পুজো শুরু করেন। এতোদিন সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশের পুজো করলেও দুর্গাপুজো করেননি। এবার প্রথমবার তিনি দুর্গাপুজো করতে চলেছেন। পুজোর নিয়মকানুন সবটাই জানা। তনুশ্রী চক্রবর্তী জানান, একজন মহিলাকে পৌরহিত্য করতে দেখে অনেকেই ভাল চোখে দেখেননা। মাঝেমধ্যে নানা কথা বলেও থাকেন। ভালো লাগা থেকে পুজো শুরু করেছিলাম। আগামীতেও পুজো করবো। দেবীডাঙার কাছে একটি আবাসনে এবার দুর্গাপুজো করবো।
advertisement
আরও পড়ুন: ঢাক বাজিয়ে সুরুচির উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঁসর-ঘণ্টার তালে অন্য মেজাজ! দেখুন
মহিলা পুরুত হিসেবে পুজো বা বিয়েতে অংশগ্রহণ করে আনন্দ পাশাপাশি কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আড়ালে কেউ কেউ ফিসফাস করেছেন। কিন্তু সামনে থেকে অনেক বেশি মানুষ এসে আমাকে দু'হাতে আশীর্বাদ করেছেন। জানিয়েছেন আমার বিয়ে দেওয়া তাদের খুব ভালো লেগেছে। তারপরে আর মহিলা পুরোহিত হিসেবে হিনমন্যতায় ভুগিনি।প্রায় ১৫ বছরেরও বেশী সময় ধরে পুজো করে আসছেন তিনি। অনেক পাত্র পাত্রীর বিয়েও দিয়েছেন তিনি। বহু জায়গয়া পৌরোহিত্য করতে দেখা গিয়েছে তনুশ্রী চক্রবর্তী। তিনি পেশায় একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: পুজোর মুখে আশা কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
তবে এখন শহরের বিভিন্ন ক্লাব, স্কুলগুলির তরফে পুজো করার জন্য ডাক এসে থাকে তনুশ্রী দেবীর। এর আগে শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলেও সরস্বতী পুজো করেছেন তিনি, সেখান থেকেই শুরু। এর পাশাপাশি আবার রোগীও দেখেন তিনি। তনুশ্রী দেবী জানান, সময় পেলেই পুজোর জন্য কেউ বললে অবশ্যই যাওয়ার চেষ্টা করি। প্রচুর মানুষ আমার পুজো দেখে প্রশংসাও করে থাকেন। বাড়িতে স্বামী, মেয়ে রয়েছে। তাঁরাও সবসময় উৎসাহ জোগান আমাকে।এবার শিলিগুড়িতে গনেশ পুজাতে পুরোহিতের ভূমিকায় তাঁকে দেখা গিয়েছে। পুজোর দক্ষিণা কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, দক্ষিণা নিয়ে আমার কোনও চাহিদা নেই। কারণ এটা আমার শখ। তাই আমি কোথাও দক্ষিণা চাই না। আর পুজোতে অনেক শাড়ি, ফল, মিষ্টি নিবেদন করা হয়। সেগুলই পুরোহিতের প্রাপ্য হলেও আমি তা নেই না। এলাকাকার দুঃস্থ মানুষদের মাঝে সব বিলিয়ে দেই। পুজো করাটাই আমার কাছে আনন্দের।
অনির্বাণ রায়





