শিলিগুড়ি লাগোয়া মাটিগাড়ায় বাড়ি শুভাশিসের। ছোট থেকেই হাতের কাজ, ছবি আঁকার শখ ছিল। এগুলো নিয়েই জীবন কাটাতে চাইতেন। ধীরে ধীরে সেই শখই তাঁর পেশা হয়ে উঠল। বিয়ের মরশুমে গাছকৌটো বানিয়ে দিব্যি জীবন কাটাচ্ছেন এই তরুণ। কারণ তাঁর কাছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিয়ের গাছকৌটো তৈরির বিপুল বরাত আসে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে কীভাবে সব গাছকৌটো সময়ের মধ্যে সরবরাহ করবেন তা ভেবে কুল পাচ্ছেন না শুভাশিস মিত্র।
advertisement
আরও পড়ুন: পাঠাগারের দেওয়ালে ফুটে উঠছে স্থানীয় ইতিহাস! চলছে শতবর্ষের জোরদার প্রস্তুতি
অথচ তাঁর পথ চলাটা খুব একটা সহজ ছিল না। গাছকৌটো তৈরি করবেন এই সিদ্ধান্ত নিতেই আশেপাশের অনেকের কাছ থেকে কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল, এ কাজ ছেলেদের নয়। তবুও দমে যাননি। সেদিন নিজের জেদ বজায় রেখে এগিয়ে চলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা যে কতটা ঠিক ছিল সেটা আজ প্রমাণিত।।
শুধু গাছকৌটো নয়, বিয়ের সমস্ত জিনিসই নিজের হাতে তৈরি করেন শুভাশিস। তার মধ্যে রয়েছে নানান ডিজাইনের বিয়ের কার্ড, কুলো, থালা, পিঁড়ি, টোপর, মুকুট, তত্ত্ব এবং অবশ্যই গাছকৌটো। তবে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বর-কনে গাছকৌটো, কলকা গাছকৌটো, সিঁদুরদানের গাছকৌটো প্রভৃতি। শুভাশিস জানান, এই গোটা কাজটাই তিনি ফেব্রিক এবং অ্যাক্রেলিক দিয়ে আঁকেন। তিনি বলেন, বাজার থেকে সাধারণ গাছকৌটো কিনে সেটাকে নিজের হাতে সাজিয়ে বিক্রি করি।’ আলপনা দেওয়া, মেহেন্দি পরানো, মেকআপ সবেতেই পারদর্শী তিনি।
গত এক বছরে অসম, দার্জিলিং, নদিয়া থেকে প্রচুর অর্ডার এসেছে তাঁর কাছে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও তাঁর হাতের কাজের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। ছেলের এই পেশায় আসা প্রসঙ্গে শুভাশিসের মা জুঁই মিত্র বলেন, ও শিলিগুড়ি কলেজ থেকে প্রাণীবিদ্যায় স্নাতক করার পর কখনও ভাবিনি হাতের কাজকে পেশা বানাবে। তবে ছোট থেকেই চেষ্টা ছিল নতুন কিছু করার। এর আগে কাগজ দিয়ে দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে নজর কেড়েছিল।
অনির্বাণ রায়