৯১ বছরের বৃদ্ধা গৌরী দেবী। তমলুকের চিকিৎসক মহলের তাঁর নাম হাওড়া জেলার মাসি। সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের পাশাপাশি বিভিন্ন ঔষধ দোকান এবং প্যাথলজি সেন্টারে ওই একটাই তার পরিচয়। আর এই পরিচয় শুধুমাত্র তাঁর কাজ দিয়ে। বাড়ি হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানার অন্তর্গত রূপনারায়ণ নদের তীরবর্তী গ্রামে। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে এই এলাকার আশেপাশের ১০-১২ টি গ্রামের সাধারণ মানুষ চিকিৎসার জন্য নদ পেরিয়ে তমলুক শহরে আসেন। আর চিকিৎসা করাতে এলেই তারাই খোঁজ করে এই মাসিকে। কারণ চিকিৎসা সংক্রান্ত বিপদে আপদে তাঁদের ভরসা মাসির ওপরেই।
advertisement
গৌরী দেবী নিজে জানান, হাওড়া জেলার রূপনারায়ণ নদের তীরবর্তী মানুষের চিকিৎসা সংক্রান্ত পাশে আছেন দীর্ঘ ৪৫ বছর। প্রতিদিন রূপনারায়ন নদী পেরিয়ে তমলুক শহরে আসেন তিনি। ডাক্তার দেখান হোক বা হাসপাতালে ভর্তি করানো সবেতেই ভরসা করেন গ্রামের মানুষেরা। সামান্য পয়সার বিনিময়ে এই কাজ দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি করে আসছেন।
ঝড় জল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এই প্রতিদিন নৌকোতে করে রূপনারায়ণ নদ পেরিয়ে তমলুক শহরে আসেন। তিনি প্রথম তমলুক শহরে আসেন স্বামীর চিকিৎসার জন্য। তারপর থেকেই ডাক্তারি মহলে পরিচয় গড়ে তোলেন। সেই থেকে শুরু, বর্তমানেও প্রতিদিন রূপনারায়ণ নদ নৌকা করে পার হয়ে রোগী নিয়ে তমলুক শহরে আসেন।
আরও পড়ুন, প্রয়াত ধূপগুড়ির বিজেপি বিধায়ক, ট্যুইটে শোকপ্রকাশ শুভেন্দুর
আরও পড়ুন, অর্পিতা… টাকা… গটআপ…! আদালত থেকে বেরিয়েই এ কী বললেন! বিস্ফোরক পার্থ
গৌরী দেবী আরও জানান, বর্তমানে তাঁর ছেলে বৌমা, নাতি-নাত বউ নিয়ে ভরা সংসার। বয়সের কারণে পরিবারের লোকজন এই কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু তিনি এই সামান্য পয়সা নয় এই কাজকে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া মনে করেন। তাই প্রায় ১০০ বছরের দোরগোড়ায় এসেও বিশ্রাম নেওয়ার কথা ভাবেন না। তিনি বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষের সঙ্গে থাকতে চাই। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে এই মানুষের সঙ্গে থাকাটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
Saikat Shee