বারোমাসে তেরো পার্বণের অন্যতম বাঙালির শারদোৎসব আজ বিশ্ব ঐতিহ্য শিরোপায় গৌরবান্বিত। বিভিন্ন পুজো কমিটির দুর্গাপূজার আয়োজনে নানা ভাবনা বিবিধ কর্মসূচি এবং শিল্পকলার উৎকর্ষতার জোয়ার বয়ে যায়। কোলাঘাটে বিরামহীন বয়ে চলা রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে নতুন বাজার সংকেত ছাত্র সংঘের শারদোৎসব এই বছর ৫১ বছরে পদার্পণ করল। এলাকার প্রায় ৩২ টি পুজো মণ্ডপের প্রায় ৫০ জন ঢাক বাদ্যকারদের দিয়ে তাদের পুজো উদ্বোধন করলেন। ঢাকিরাই তাঁদের ঢাকে পুজোর বোল বাজিয়ে এবং মঙ্গলদ্বীপ প্রজ্জ্বলন করে এই মণ্ডপের উদ্বোধন করেন।
advertisement
আরও পড়ুন: ইংরেজদের পুড়িয়ে দেওয়া জমিদার বাড়ি, দিঘার পাশে এই দুর্গাপুজোর ইতিহাস চমকপ্রদ
আমরা সবাই যখন পুজোর আনন্দে মেতে উঠি, তখন ঘর সংসার ফেলে মণ্ডপে মণ্ডপে মলিন পোশাকে ঢাক বাজায় ঢাকিরা। উৎসবে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েও ঢাক বাদ্যকররা রয়ে যান অন্তরালেই। পুজোর কটাদিন প্যান্ডেলে এক পোশাকেই দিনরাত কেটে যায়। পুজো উৎসবে ঢাকে বোল বাজিয়ে যায়। তাঁদের জীবনে একটাই পুজো বা উৎসব, কেবল জীবন জীবিকার অন্বেষণ। তাই এবার পুজোর উদ্বোধনে ঢাক বাদ্যকরদের পুজোর উৎসবে সবার সঙ্গে শামিল করতেই এই উদ্যোগ নেয় পুজো উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি ফুল মালা চন্দনের ফোটা উত্তরীয়র পরিয়ে বরণ করে নেওয়ার পর, ঢাকিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন বস্ত্র, বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী এবং সাধ্যমত নগদ অর্থ।
আরও পড়ুন: স্বর্গ থেকে পাঁশকুড়ায় নেমে এসেছে ইন্দ্রপুরী! মণ্ডপের সাউন্ড এফেক্ট চমকে দেবে
উদ্বোধনের এই বিশেষ মুহূর্তে পঁচিশ জন মানুষ মরনোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গিকারবদ্ধ হন। দুঃস্থদের হাতে নতুন পোষাক এবং প্রতিবন্ধীদের প্রদান করা হয় ক্র্যাচ, হুইলচেয়ার ও ট্রাই সাইকেল ইত্যাদি সামগ্রী। তাদের এবারের পুজোয় দেবী মূর্তি ডাকের সাজে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী ঘরানার। প্রতিমা নির্মাণ করেছেন চন্দনগরের বিখ্যাত মৃৎশিল্পী। পুজো মণ্ডপের সাজ সজ্জায় স্থান পেয়েছে সমাজ সচেতনতামূলক বিষয়। ডেঙ্গি প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ এবং পণপ্রথা রোধ, ভয়ঙ্কর ডি জে সাউন্ড বয়কট, পরিবেশ দূষণ রোধ ও পথ নিরাপত্তা সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সচেতনতা মূলক ছবি পোস্টার ও মডেল দিয়ে মণ্ডপ সজ্জা করা হয়েছে।
সৈকত শী