বর্ধমান থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আঝাপুর। বর্ধমান কলকাতা কর্ডলাইনে মসাগ্রাম স্টেশনের খুব কাছেই আঝাপুর মৌজা। আঝাপুরের দেউলিয়া গ্রামে সাত দেউলের অবস্থান। প্রায় হাজার বছরেরও পুরনো এই ‘সাত দেউল’ নামক জৈন মন্দির । কথিত আছে পালযুগের রাজা শালিবাহন এই দেউল নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরটির ভিত পঞ্চরত্ন আলেখ্যে তৈরি। এর বিশেষত্ব হচ্ছে চতুর্দিকে বিশাল বাঁকানো সুউচ্চ টাওয়ার ও প্রবেশদ্বারে রয়েছে ধনুকাকৃতি গেট। প্রবেশদ্বারের ওপরে, বাইরের দেওয়ালে রয়েছে সুন্দর কারুকার্য করা চৈত্য-জানালা। মন্দিরের গঠন শৈলী থেকে নির্মানের সময়কাল আনুমানিক খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দী বলে মনে করা হয়। দেউলের ভিতরে কোনও বিগ্রহ বা মূর্তি নেই।
advertisement
আরও পড়ুনঃ চাষের জমির ওপর দিয়ে গেইল ইন্ডিয়ার পাইপ লাইন! ক্ষুব্ধ চাষীরা
কীভাবে পৌঁছবেন:
একদিনের ছোট্ট আউটিংয়ের আদর্শ স্থান এই সাত দেউল। কলকাতা ও বর্ধমান থেকে বাস ও ট্রেনের যোগাযোগ খুবই ভালো। সকাল সকাল ঘর থেকে বেরিয়ে হাওড়া বা শিয়ালদা থেকে বর্ধমানের লোকাল ট্রেনে উঠুন। মেমারি স্টেশনে নেমে টোটোতে উঠে রওনা দিন সাত দেউলের উদ্দেশে। কিছুটা এগোতে মূল রাস্তা ছেড়ে দেখবেন পিঁচমোড়া সর্পিল রাস্তা ধরে যাবে টোটো। অবশেষে এসে পৌঁছবেন পাঁচিল ঘেরা বড় লোহার গেটের সামনে। মাত্র মিনিট পনেরোর মধ্যে পৌঁছে যাবেন সাত দেউল।
আরও পড়ুনঃ জমিতে নয়! বেহাল রাস্তায় ধান রোপণ করলেন গ্রামবাসীরা!
এখানকার পরিবেশ কেমন:
সাত দেউল যাওয়ার পথে সবুজে ঘেরা মনোরম রাস্তা চোখ দুটোকে দেবে আপনার এক অনাবিল প্রশান্তি যা শহুরে জীবনে লুপ্তপ্রায়। সারাদিন মনপ্রাণ ভরে নিন অক্সিজেন। ঘ্রাণ নিন হাজার বছরের পুরাতন ইঁটের। অনুভব করুন অতীতের সোনালী দিনে এই দেউল চত্বরের জৈন ধর্মাবলম্বীদের ব্যস্ত জীবনকে। ফিরে যান জটিলতাহীন এক প্রাচীন জীবনযাত্রায়। অতীতের পদধ্বনি আপনার অবেচেতন মনের দরজায় কড়া নাড়াবেই।
কোথায় থাকবেন:
সাত দেউলের আসে পাশেই রয়েছে থাকার ব্যবস্থা। সেখানেই রাত কাটাতে হবে আপনাকে।
কোথায় করবেন মধ্যাহ্ন ভোজন ?
সাত দেউলে কোনও খাবার হোটেল তেমন একটা নেই বললেই চলে। মধ্যাহ্ন ভোজনের জন্য আসতে হবে আপনাকে মসাগ্রামে। ওখানে খাবার হোটেল পেয়ে যাবেন, যেগুলির খাবার খুবই সস্তা ও সুস্বাদু। তবে হালকা খাবার ও পর্যাপ্ত জল সঙ্গে রাখুন। যদি আপনি একদিনের ভ্রমণ স্থান খোঁজেন, তাহলে এই সাত দেউলকে রাখতে পারেন লিস্টে। তাই একবার ঘুরে যেতেই পারেন সাত দেউল। এখানকার মনোরম দৃশ্য আপনার মন ভালো করতে বাধ্য।
Malobika Biswas