আরও পড়ুন: বুলডোজার নামল বহরমপুরে, পুজোর আগে গুঁড়িয়ে গেল একের পর এক দোকান
বাজারে এসেছে নিত্যনতুন শাড়ি তৈরির মেশিন। আগে যেখানে একটা শাড়ি বুনতে তাঁতিদের কয়েকদিন সময় লাগত, এখন মেশিনের সাহায্যে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৈরি হয়ে যাচ্ছে তাঁতের শাড়ি। আর তাতেই তাঁত শিল্পীদের পেটের ভাত মারা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে পাওয়ারলুমের সাহায্যে শাড়ি তৈরি করেন এমন এক শিল্পী বলেন, এখানে ৯৫% মানুষ তাঁতের উপর নির্ভরশীল ছিল। এখন সেই তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ চাষের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। আসলে আগে এখানে ছিল সবই হস্তচালিত তাঁত। আর এখন চারিদিকে পাওয়ারলুম হয়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে টেক্কা দিতে না পেরেই তাঁত শিল্পীদের বেশিরভাগের এই দুরাবস্থা।
advertisement
ওই তাঁত শিল্পী আরও জানান, মেশিনের সাহায্যে অল্প সময়ের মধ্যেই শাড়ি তৈরি হয়ে যায়। সুন্দর ডিজাইন মেশিনের দ্বারাই করা হয়। সেক্ষেত্রে ডিজাইনটাও অনেক সুন্দর হয়। পাওয়ারলুম ব্যাবহারের ফলে বেশ শাড়ি তৈরির খরচও কম হয়। ফলে এই শাড়ি বিক্রি করে অধিক লাভের মুখ দেখেন ব্যাবসায়ীরা। তবে এসবের পাশাপাশি হাতে বোনা তাঁতের আভিজাত্য যে আলাদা সেটাও স্বীকার করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে এক শিল্পী জানান, আমাদের এই হস্তচালিত তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের এই শাড়ির পরিশ্রম বেশি, তাই মজুরি বেশি। সেই কারণে আমাদের থেকে শাড়ি নিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব জমি নেই। তাই এখন লোকের জমিতে কাজ করেই সংসার চলছে। তাঁত চললে আমাদের খুবই ভাল হয়, তাহলে আমরা ঘরে বসে কাজটা করতে পারব।
এই পরিস্থিতিতে পূর্বস্থলীর তাঁত শিল্পীদের দুরবস্থা মেটার এখনই কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে দিলে ধীরে ধীরে হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি মুছে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে।
বনোয়ারিলাল চৌধুরী