ছরের বিভিন্ন সময় এই হাতের তাঁত মেশিন নিয়ে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় তাঁদের। অসমের গামছা, তাঁতের শাড়ি ও মেখলা তৈরি করে থাকেন তাঁরা। চৈত্র মাসের শেষ এবং বৈশাখের শুরুর সময় অসমের গামছার চাহিদা বেড়ে ওঠে। এই সময় অনেকটা চাপে থাকেন তাঁরা।
advertisement
তাঁতের এক শ্রমিক জ্যোতিন্দ্র রায় জানান, “দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে তাঁত শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। যদিও বর্তমানে এই শ্রমিক প্রায় নেই বললেই চলে। এর মূল কারণ, হাতে চালান তাঁত মেশিনের খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। তবে জেলায় এখনও এই মরসুমে হাতে চালান তাঁতের গামছার চাহিদা বাড়ে। এই সময় অসমে বিহু অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সেজন্য প্রচুর চাহিদা থাকে এই গামছার। তাই চাহিদা পূরণ করতে তাঁরাও কাজ শুরু করেন। আজও হাতে টানা তাঁতের কাপড় বেশি পছন্দ করেন মানুষ।”
আরেকজন শ্রমিক সঞ্জিত দে জানান, “তিনিও দীর্ঘ সময় ধরে এই বিষয়টি দেখছেন। প্রতি বছর ঠিক এই সময়ে এই গামছার চাহিদা বাড়ে। তাই তাঁদের কাজও বেড়ে ওঠে অনেকটা। ফলে কিছুটা বেশি রোজগারের মুখ দেখেন তাঁরাও। দীর্ঘ সময় ধরে এটা চলছে।”
তাঁতের মালিক অপর্ণা দেবনাথ জানান, “এই গামছা গুলির একটি করে থানের মধ্যে মোট চারটি গামছা থাকে। আর এই এক একটি থান মোট ২২০ টাকায় বিক্রি করা হয় বাজারে পাইকারি দামে। এরপর গামছা পাইকারি কিনে নিয়ে অসমে পাঠিয়ে দেয় বিক্রির জন্য।”
বর্তমানে জেলার দিনহাটা, কোচবিহার সদর, নিশিগঞ্জ ও তুফানগঞ্জের বেশকিছু এলাকায় এই তাঁতের কাজ হয়ে থাকে। জেলার এই তাঁত শিল্পীদের তৈরি কাপড়ের অসমের বুকে বেশ অনেকটাই চাহিদা রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে এই কাজ করেই বহু মানুষ নিজেদের রুজি-রুটি জোগাড় করে আসছেন। তবে আধুনিকতার জন্য আগামী দিনে এই শ্রমিকদের অস্তিত্ব ধীরে ধীরে সংকটের মুখে পড়ছে।
Sarthak Pandit