বর্ষার তাণ্ডব কাটিয়ে শীতের হাওয়া বইছে ঠিকই, কিন্তু তিস্তার অতিরিক্ত জলের ক্ষত এখনও শুকোয়নি জলপাইগুড়ির চাষিদের জীবনে। নদীর স্রোতে ধান নষ্ট হওয়ায় এবছর অনেক পরিবারেই ফলন কম। সোনালি ফসল হাতে এলেও কৃষকদের মুখে ফুটছে না স্বস্তির হাসি। কারণ ফড়েদের কাছে বিক্রি করলে দাম কম। আবার বাজারে সঠিক মূল্য মিলবে কি না, সে চিন্তাও কম নয়। আর এইসব চিন্তার অবসান ঘটাতেই সব সময় পাশে রয়েছে প্রশাসন।
advertisement
তাই এই অবস্থায় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ৯৬টি সরকারি ধান বিক্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত কেন্দ্রও এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রতি কুইন্টাল ধানের সরকারি দাম ২৩৬৯ টাকা। যদি কৃষক নিজের বাড়ি থেকে ধান পৌঁছে দেন, তবে মিলবে অতিরিক্ত ২০ টাকা। এমনটা যায় দিয়েছেন খাদ্য দফতর আধিকারিক। এই কারণে প্রশাসন কৃষকদের সতর্ক করে বলছে, “ফড়েদের কাছে ভুলেও ধান বিক্রি করবেন না। সরকারি কেন্দ্রেই মিলবে ন্যায্য মূল্য।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তিস্তার জলে ভেসে যাওয়া জমি, কালো হয়ে যাওয়া ধান আর কমে যাওয়া ফলনের ধাক্কায় এখনও দিশেহারা কৃষক পরিবারগুলি। কেউ বলছেন, “আগে যেখানে ৮–৯ মণ ধান পেতাম, এবার পাচ্ছি পাঁচ মণও না। রঙ বদলে গেছে, মানও নেই।” তবু যতটুকু ধান বেঁচেছে, তা নিয়ে এখন চলছে ঝাড়াই-বাছাই। গ্রামের উঠোনে, দাওয়ায়, মাঠের ধারে সারাদিনের শব্দ—ধান ঝালাইয়ের। কারণ শীতের দিনগুলিতে সেই অল্প ধানই হবে তাঁদের ভরসা।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এবছর ধান বিক্রির তালিকায় নাম নথিভুক্ত করেছেন প্রায় ৫২ হাজার কৃষক, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। অর্থাৎ কৃষকেরা এবার সরকারি ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখছেন। দীর্ঘ ক্ষতির পর কৃষকদের মুখে একটু হলেও আশার আলো ফুটছে। সরকারের ন্যায্য মূল্য প্রকল্প তাঁদের কঠিন বছরে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে এটাই এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা!





