মূলত, উত্তরবঙ্গের দুই দিনাজপুর সহ মালদা জেলা জুড়েই মুখা নাচের প্রচলন রয়েছে। কোথাও এর নাম গম্ভীরা তবে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশেষত কুসমুন্ডি, গঙ্গারামপুর, বংশীহারী, বালুরঘাট ও হিলি ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে এই নাচ ‘মুখা নাচ’ বলেই পরিচিত।
আরও পড়ুন: বর্ষার মরসুমের আগেই রাজ্য সড়কের বেহাল দশা! সকলের দাবি দ্রুত সংস্কার
advertisement
নানা চরিত্র নিয়ে সেজে উঠা মুখোশ পরবর্তীকালে এইসব মুখোশ শিশুদের খেলনা হয়ে উঠেছে, হয়ে উঠেছে গৃহসজ্জার উপকরণ। কিন্তু মুখোশের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা লৌকিক আবেগ ও জাদুবিশ্বাস মুখোশের আড়ালেই যেন লুকিয়ে পড়েছে। অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রাচীন এই লৌকিক নৃত্য তাঁর গরিমা হারাচ্ছে। তবে, ব্যতিক্রম বালুরঘাটের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শুভম কুমার মন্ডল। ইতিহাস বিষয় নিয়ে বালুরঘাট কলেজ থেকে স্নাতক হবার পর বাড়ির মন্দিরে থাকা বিভিন্ন মুখোশ নিজেই সারিয়ে তোলার ও রং করাতে মননিবেশ করেন। এখান থেকেই শুরু। বর্তমানে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে স্থানীয় কিছু কিশোরকে নিয়ে এই নাচের দল তৈরি করেছেন ইতিমধ্যেই।
আরও পড়ুন: ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করেও ফের শ্মশানে বিকল বৈদ্যুতিক চুল্লি! বিপাকে সাধারণ মানুষ
এবিষয়ে শুভম কুমার মন্ডল জানান, “কুশমন্ডির মহিষবাথানকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানকার শিল্পীরা জি আই ট্যাগ পেয়ে বিভিন্ন মেলায় গিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং তাদের তৈরি করা মুখোশ বাজারে বিক্রি হয়। কিন্তু বালুরঘাট সহ অন্যান্য জায়গায় যে শিল্পীরা আছেন তাঁরা এখনও সেই স্বীকৃতি পাননি। প্রশাসনিকভাবে এই লৌকিক সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগ গ্রহণ এবং তাদেরও সরকারি সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা উচিত।”
বর্তমানে তাঁর দলে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন কিশোর ও যুবক রয়েছে। এই সমস্ত কিশোর ও যুবকেরা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই নাচ দেখিয়ে বেড়ায়। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী বিভিন্ন কালীর মুখোশ যেমন শ্মশান কালী, শ্যামা কালী, মানসকালী, চামুন্ডা মুখোশ পরে এই ধরনের নাচ অনুষ্ঠিত করা হয়। এছাড়াও রয়েছে ডাকিনী এবং লৌকিক উপদেবতা মাসনা। যাতে আগামী প্রজন্ম এই সংস্কৃতি থেকে মুখ না ফেরায় তার জন্য প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে কারণ ধীরে ধীরে এই ধরনের সংস্কৃতি গুলো গ্রাম বাংলা থেকে মুছে যাচ্ছে।