প্রসঙ্গত, অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভাকে গার্বেজ ফ্রী শহর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় ইতিমধ্যেই অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার হিজলিয়া মোড় এলাকায় সরকারি জমিতে তৈরি করা হয়েছে সুবিশাল ডাম্পিং গ্রাউন্ড আর সেখানেই বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের প্রতিদিনের অ-ব্যবহৃত বর্জ্য পদার্থ জমা করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন ঃ ইছামতীর তীরে বাংলাদেশ সীমান্তে সবুজে ঘেরা মনোরম পরিবেশে ঘুরতে চলে আসুন টাকিতে
advertisement
ফলে বর্জ্য পদার্থের পাহাড়ে পরিণত হয়েছিল ওই এলাকা। পুরসভার তরফ থেকে মিশন নির্মল বাংলায় গোটা পৌর এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি থেকে নোংরা আবর্জনা প্লাস্টিক সহ পচনশীল বজ্র পদার্থ নিয়ে আসার কাজ করছে পুর সভার কর্মীরা।
আর তাই এবার, অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভা এবং হাবড়া পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে হিজলিয়া এলাকার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে চালু করা হয়েছে পচনশীল বস্তু থেকে সার তৈরি এবং অ-ব্যবহৃত বজ্র পদার্থ থেকে প্লাস্টিক তৈরীর কাজ। সেই কাজের শুভ উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার পৌর প্রধান প্রবোধ সরকার সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা এবং সরকারী আধিকারিকেরাও।
আরও পড়ুন ঃ যশোর রোডের দুপাশ ঘিরে, দত্তপুকুরের ফাইবার শিল্প ক্রমেই হয়ে উঠছে জনপ্রিয়
পচনশীল বস্তু থেকে যে সার হবে তা কৃষি কাজ ও পৌর এলাকার বিভিন্ন বাগানে ব্যবহার করা হবে। পৌরসভা থেকে সেই সার নিতে পারবেন সাধারণ মানুষজনও। পরবর্তীতে পৌরসভার আউটলেট এর মাধ্যমেও বিক্রি করা হতে পারে বর্জ্য থেকে উৎপাদিত সার বলেই জানান পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সিদ্ধার্থ মুখার্জি। বর্তমানে, অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভায় ৮০ মেট্রিক টন, হাবরা পুরসভায়ও প্রায় ৮০ মেট্রিক টন এবং পরবর্তীতে গোবরডাঙ্গা পুরসভার ৩০ মেট্রিক টনের প্রতিদিনকার বর্জ্য এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে আসা হবে।
আর এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য পদার্থ রিসাইকেলিং এর মাধ্যমে পুনঃ ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত দ্রব্যে রূপান্তরিত করা হবে। আর সেই প্লাস্টিক থেকেই আগামী দিনে অশোকনগরে রাস্তা নির্মাণেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে তার জন্য এখনও কয়েক বছর সময় লাগবে বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, ১২০ মাইক্রোনের নিচে প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করারও কাজ চলছে পৌর এলাকার নানা প্রান্তে।
আরও পড়ুন ঃ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় আগুন থেকে রক্ষা পেতে প্রশিক্ষণ দিল দমকল বাহিনীর
এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে চলছে সচেতনতা প্রচারও। আর তাই গার্বেজ ফ্রী শহর হিসেবে ইতিমধ্যেই অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভা তাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে শুরু করেছে। ফলে আগামীদিনে অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার কোথাও কোনো নোংরা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যাবে না।
দীর্ঘদিন ধরে হাবরা নৈহাটি রোডের ধারে স্তুপাকৃত পাহাড়ের যে জঞ্জাল দেখা যেত তাও আর দেখা যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে দুর্গন্ধ সইতে হত মানুষকে, সে সমস্যারও সমাধান হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পৌর আধিকারিক। আনুমানিক প্রায় ৩৩ কোটি টাকা খরচ হবে এই প্রজেক্টে। এটি একটি ক্লাস্টার প্রজেক্ট হিসাবেই দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন ঃ ‘রাস্তাঘাটের উন্নতি, ঘরবাড়ির উন্নতি’, সিপিআইএম বিমুখ মজিদ মাস্টারের গলায় তৃণমূল স্তুতি
ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য বিভিন্ন পুরসভা থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা এবং পুরুষদের নেওয়া হয়েছে। নতুন আরও কর্মসংস্থানেরও সুযোগ থাকছে প্রজেক্ট ঘিরে বলে জানান, অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার কোঅর্ডিনেটর সিদ্ধার্থ মুখার্জি। পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস ভট্টাচার্য জানান, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বিল্ডিং মোড় থেকে নালন্দা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার প্লাস্টিক কোটিং রাস্তার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অশোকনগরের মানুষ নতুন একটা জিনিস পাবে আগামীদিনে। বছর তিনেকের মধ্যেই এই রাস্তা দেখা যাবে অশোকনগরে বলেও আশাবাদী এই জনপ্রতিনিধি। বিষয়টি সামনে আসতে ইতিমধ্যেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে শুরু করেছেন অশোকনগরের মানুষজন।
Rudra Narayan Roy