যে ছবি দেখলে আপনার মনে হবে, সত্যিই কারওর পৌষ মাস, তো কারওর সর্বনাশ। আগুন তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে, সকলেই তখন ঘটনাস্থলের চারিদিকে নিজেদের শেষ সম্বল বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছেন। ধোঁয়ায় ঢেকে গোটা এলাকা। নিজেদের ঘরবাড়ি চোখের সামনে ছাই হয়ে গিয়েছে, কোথায় থাকবেন তাঁরা! কোথায় আশ্রয় নেবেন কিছুই ভেবে উঠতে পারছেন না, ঠিক সেই সময়ই কিছু মানুষ সেই সব পুড়ে যাওয়া বস্তি থেকে টাকা পয়সা, সোনাদানা-সহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালালেন বলেই অভিযোগ তুললেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
advertisement
আরও পড়ুন : আজ শ্রী শ্রী সারদা মায়ের ১৭০ তম জন্মতিথি, মহা সমারোহে এই পুণ্যতিথি পালিত হচ্ছে বেলুড় মঠে
আর এই শেষ সম্বল খোঁজার নামে করে টাকা পয়সা-সহ মূল্যবান জিনিসপত্র, সোনার গয়না খুঁজতে দেখা গেল পুরুষ মহিলা উভয়কেই। তাঁদের অনেককেই ওই বস্তিবাসীরা চেনেন না, জানেন না বলেও জানান। পোড়া জিনিসপত্র কুড়িয়ে এনে তা ধুয়ে সেখান থেকে পয়সা, সোনাদানা নিয়ে কিছুটা ফাটকা মুনাফার উদ্দেশ্যেই এই কাজ করে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তাদের সামাল দিতে রীতিমতো দমকলকর্মীদেরও বেগ পেতে হল। পাশাপাশি কিছু অতি উৎসাহী মানুষ এসে দাঁড়িয়ে দেখলেন কীভাবে আগুন জ্বলছে, কেমন দেখাচ্ছে আগুন, কতগুলি বাড়ি পুড়ল-তা চাক্ষুষ করে মোবাইলবন্দি করতে। যেন কোনও আকর্ষণীয় জিনিস, না দেখতে পারলেই জীবন বৃথা। মানুষের হাহাকার চিৎকার শুনতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষই এসে জড়ো হলেন।
আরও পড়ুন : রানির এই সঙ্কটে আরও একবার বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলেন শাহরুখ
তবে হাবরা রেলপরের বস্তির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ছবি ধরা পড়ল তা বিরল। পুড়ে যাওয়া বাড়িগুলি থেকে খুঁজে পাওয়া জিনিস বাছাই হল পাশেই। একদল যুবক তখন মাথা গুঁজে এক নাগাড়ে খুঁজে চলেছেন টাকা পয়সা। অপরদিকে, এক গৃহবধূকে দেখা গেল পুড়ে যাওয়া কিছু অংশ থেকে সোনার জিনিস ভেবে তা নিয়ে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। প্রশ্ন করতেই সকলের দাবি, তাদেরও ওখানে ঘর ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও ঘর নয়। যে যেখানে পেরেছে লুঠ চালিয়েছে বলেই এক প্রকার অভিযোগ জানালেন স্থানীয় ওই বস্তি এলাকার প্রকৃতই নিঃস্ব হওয়া পরিবারের সদস্যরা। মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যেখানে কাম্য, সেখানে মানুষের বিপদে দূরে দাঁড়িয়ে এভাবে একশ্রেণীর মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ায় জাহির করার হিড়িক আগামী দিনে সামাজিক দায়বদ্ধতার বিরুদ্ধে যেন বড় প্রশ্ন তুলে দিল, এমনটাই মনে করছেন সমাজ সচেতন মানুষ।