জীবন আলো নার্সিংহোমের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে জালিয়াতির প্রমাণ সাংবাদিকরা তাঁদের ক্যামেরায় রেকর্ড করতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে একদল দুষ্কৃতী। সাংবাদিকদের বাইক কেড়ে নেওয়া হয়, ভেঙে দেওয়া হয় চশমা। বুম ছিনিয়ে নেওয়াও হয়। এতেই ক্ষান্ত হয়নি দুষ্কৃতীরা। সাংবাদিকদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে সব ভিডিও ডিলিট করা হয়। সেই সঙ্গে চলে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও মারধর। কোনরকমে সেখান থেকে পালিয়ে আক্রান্ত সাংবাদিকরা আমডাঙা থানায় আশ্রয় নেন।
advertisement
আরও পডুন: বেড়া দেওয়া নিয়ে বিবাদ, শোধ নিতে জমির ফসল গবাদি পশু দিয়ে খাইয়ে দিল পাড়ার ক্লাব!
সাংবাদিকদের ওপর এই পৈশাচিক আক্রমণের ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা থানার আওয়ালসিদ্ধি এলাকায়। ওখানেই অবস্থিত অভিযুক্ত জীবন আলো নার্সিংহোম। সম্প্রতি জানা যায়, এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বিবির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বেশ কয়েক মাস আগে ওই নার্সিংহোমে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেইসময় নার্সিংহোম কতৃপক্ষ কার্ডটি পরীক্ষার নাম করে ১৮ হাজার ৩৯ টাকা তুলে নেয়! এরপর জানায় কার্ডটি খারাপ আছে। বলে, বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। এরপর জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে রাবেয়া বিবি জানতে পারেন, তাঁর হার্নিয়া অপারেশন করার নাম করে ওই নার্সিংহোম টাকা তুলে নিয়েছে!
কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে রাবেয়া বিবি ও তাঁর স্বামী আইজুল মণ্ডল স্বাস্থ্যসাথী দফতর, আমডাঙা থানা, বিডিও, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এমনকি জেলাশাসকের দফতরেও লিখিত অভিযোগ করেন।কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে গিয়েও তিনি গোটা ঘটনার কথা জানান। তাও জীবন আলো নার্সিংহোমের বিরুদ্ধেও কোনও নেওয়া হয়নি।
এই খবর জানাজানি হতেই সাংবাদিকরা ওই নার্সিংহোমে খবর সংগ্রহের জন্য যান। তাঁরা সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে অনিয়মের বেশ কিছু প্রমাণও পান। এরপরই ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের ইন্ধনে তাঁদের ওপর দুষ্কৃতীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ।
এদিকে রাবেয়া বিবির স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে বিনা কারণে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠার পরও ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে কি গরিবের চিকিৎসার নামে এভাবেই সরকারি টাকা তছরূপ করে চলেছে একশ্রেণির বেসরকারি নার্সিংহোম? এদিন সাংবাদিকদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ পেয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে আমডাঙা থানা। আধিকারিক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন। গোটা ঘটনার খবর শুনেই থানায় ছুটে আসেন আমডাঙার বিধায়ক। তিনিও ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
রুদ্রনারায়ণ রায়