উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার জলেশ্বর শিব মন্দিরের মূল বিগ্রহ, শিবলিঙ্গ বছরে মাত্র একবার উঠে আসে শিব পুকুর থেকে। বাকি সময় জলের নিচেই থাকেন মহাদেব। জলের নিচে ঈশ্বর বাস করার কারণেই এই এলাকার নাম হয়েছে জলেশ্বর। আমাদের দেশে শিবের প্রচুর মন্দির ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যেগুলো কোনো না কোনো অলৌকিক ঘটনার কারণে বেশ জনপ্রিয় তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ঠিক এমনই এক মন্দির গাইঘাটার জলেশ্বর শিব মন্দির। এই মন্দিরের শিব লিঙ্গের মাহাত্ম্যের কথা জেনে ভক্তরা ছুটে আসেন বাবা মহাদেবের টানে।
advertisement
আরও পড়ুন: "মেয়েটিকে আঘাত না করলেই হল।" নাগার নতুন প্রেম নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন সামান্থা!
প্রাচীন এই মূল বিগ্রহটি অবশ্য এখন বছরের নির্দিষ্ট দিন ছাড়া দেখা যায় না। জলেশ্বর মন্দির এর পাশেই রয়েছে চার একর জমির উপরে একটি পুকুর। যা এলাকায় শিবপুর নামেই পরিচিত। বছর ভর এই পুকুরে জলের নিচে রাখা থাকে বিগ্রহটি। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিবছর চৈত্র মাসের তৃতীয় সোমবার পুকুর থেকে মহেশ্বর কে তুলে আনেন চড়কের সন্ন্যাসীরা। এরপর, ওই বিগ্রহ নিয়ে সন্ন্যাসীরা পায়ে হেঁটে হালিশহরে গিয়ে, গঙ্গা স্নান করান। তারপর বিগ্রহকে ফিরিয়ে এনে স্থানীয় আটটি গ্রামের ভক্তদের বাড়িতে পুজো করান হয়। পয়লা বৈশাখ জলেশ্বর মন্দিরের মূল বিগ্রহকে ফের শিব পুকুরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে আটশ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরের মাহাত্ম্য নিয়ে ছড়িয়ে আছে নানা কথা।
আরও পড়ুন:
ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, দ্বাদশ শতকের শেষ দিকে শিব পুজোর প্রচলন শুরু হয় গাইঘাটার এই জলেশ্বর অঞ্চলে। মন্দির ও পর্যটন উন্নয়ন কমিটির কার্যকরী সম্পাদক সহদেব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রথমে মন্দিরটি ছিল ছোট ও সাধারণ মানের। পরবর্তীতে গোবরডাঙ্গার জমিদার রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শিবমন্দের জন্য ৬০ বিঘা জমি দান করেছিলেন। এই মন্দিরের পাশেই রয়েছে চার একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে শিবপুকুর । বছরভর পুকুরের নীচে রাখা থাকে বিগ্রহটি। যেহেতু জলের নীচে ইশ্বর অর্থ্যাৎ মহাদেব বাস করেন সেহেতু এই অঞ্চলের নাম হয়েছে জলেশ্বর। কথিত আছে মনের বিশ্বাস নিয়ে কেউ এই মন্দিরের বাবা ভোলানাথের পুজো দিলে তার মনস্কামনা পুণ্য করে থাকেন দেবাদিদেব। আর সেই বিশ্বাসে প্রতিবছর শিবরাত্রে ও চৈত্র মাসে পুজো দিতে দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসেন পুর্নার্থীরা। এছাড়া সারাবছর ধরেই তারকেশ্বরের মতোই পুর্নার্থীদের ভিড় লেগে থাকে জলেশ্বর শিবমন্দিরে।
Rudra Narayan Roy