এ দিন পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার শুরুর দিকে এই মহকুমার একাধিক পঞ্চায়েতে বিজেপির ভাল ফলের খবর আসলেও শেষ মুহূর্তে তা ঘুরে যায়। অর্থাৎ দ্বিতীয় রাউন্ডের গণনার শেষে দেখা যায় ফলাফল তৃণমূলের দিকে চলে গিয়েছে। বনগাঁ মহকুমায় ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এই ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৬টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। যদিও আসনের দিক থেকে বিরোধীরাও বেশ কিছু আসন দখল করেছে। তার মধ্যে বিজেপির আসন সংখ্যাই বেশি।
advertisement
আরও পড়ুনঃ নির্দলদের দলে ফেরানো নয়, পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরতেই বড় সিদ্ধান্ত তৃণমূলের
অন্যদিকে, গাইঘাটা ব্লকে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। একটি পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়েছে। সেই পঞ্চায়েতটি হল ফুলসরা। বাগদা ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৯টি। তার মধ্যে ৬টি পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে। ২টি পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। এই ২টি পঞ্চায়েত হল হেলেঞ্চা এবং কনিয়াড়া ২। কনিয়াড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতটি ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁ মহকুমা জুড়ে তৃণমূল অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল। সেই নিরিখে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই ভাল হয়েছে শাসকদলের। যদিও এ ব্যাপারে বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্যে আদৌ পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। সর্বত্রই গায়ের জোরে নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এমন ফলাফলই কাম্য ছিল।
আরও পড়ুনঃ শুভেন্দু-এফেক্ট ফিকে জেলা পরিষদে, ‘জটিল’ পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের জয়জয়কার!
উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ, বাগদা এবং গাইঘাটা ব্লকে গ্রামপঞ্চায়েত ৩৮টি। আসন সংখ্যা ৯২৪। তার মধ্যে বনগাঁয় তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। ২০১৮ সালে বনগাঁ মহকুমায় ৪টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি। এ বার এই চারটিতেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। বনগাঁ ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবকটিই দখল করেছে জোড়াফুল শিবির। গাইঘাটা ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টি দখল করেছে তৃণমূল। ইছাপুর পঞ্চায়েতটি ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
এই পঞ্চায়েত এলাকাতেই বাড়ি বিজেপির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তুনু ঠাকুরের। তুলনায় কিছুটা ভালো ফল হয়েছে বাগদা ব্লকে। এই ব্লকে ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩টি দখল করেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতি থেকেও কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে বিজেপি।
নবজোয়ার কর্মসূচিতে মতুয়াদের পুণ্যভূমি ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, বিজেপির সাংসদ-বিধায়ক এবং কর্মীদের বাধায় মূল মন্দিরে পুজো দিতে পারেননি তিনি। জবাবে মতুয়ারা ভোট বাক্সে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন অভিষেক। ফলাফল সামনে আসতেই ঘটনাটি খানিকটা হলেও তেমনই হল। এমনকি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সদস্য শান্তনু ঠাকুরের নিজের বুথেই পরাজিত হয়েছে বিজেপি। তবে কি মতুয়া ভোট বিজেপির থেকে মুখ ফেরাছে! এখন রাজনৈতিক মহল সেই প্রশ্নই তুলতে শুরু করেছে। যদিও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তুনু ঠাকুর বলছেন, পূর্বের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরিখে বিজেপি ভালোই ফল করেছে।
Rudra Narayan Roy