TRENDING:

Creative Election Battle: ভোট যুদ্ধে হারিয়ে যেতে বসা ছড়ার চল ফিরছে সিপিএমের দেওয়াল লিখনে

Last Updated:

তখন বিজেপি হয়নি, ছিল জনসঙ্ঘ। তারা এক লোকসভা নির্বাচনের আগে অদ্ভুত একটি ছড়া স্লোগান দেওয়ালে দেওয়ালে লিখেছিল- "বিড়ি মে তামাকু হ্যায়, কংগ্রেস‌ওয়ালা ডাকু হ্যায়"

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
নদিয়া: ভোট মানেই একসময় হরেক রকম ছড়া আর ব্যঙ্গচিত্রে ভরে উঠতো বাংলার দেওয়াল। সারা ভারতের নির্বাচনের থেকে বাংলার ভোট এখানেই যেন অনেকটা আলাদা হয়ে যেত। সে শুধু রাজনৈতিক প্রচার ছিল না, বরং সৃষ্টিশীলতাকে হাতিয়ার করে প্রতিপক্ষকে মাত করার মাধ্যম ছিল এই ছড়া ও ব্যঙ্গচিত্র। এই ছড়াকে মাধ্যম করে প্রতিপক্ষ দলগুলির মধ্যে নির্বাচনী প্রচারের ডুয়েল ছিল দেখার মতো।
advertisement

ইন্দিরা গান্ধি কংগ্রেস ভাঙার আগে শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির প্রতীক ছিল জোড়া বলদ। সেই সময় নির্বাচন এলেই দেওয়ালে দেওয়ালে কংগ্রেস কর্মীরা একটি ছড়া লিখতেন-

“ভোট দেবেন কোথায়/ জোড়া বলদ যেথায়”

পাল্টা বামেরা ঠিক তার পাশের দেওয়ালেই ব্যঙ্গ করে লিখত-

View More

“জোড়া বলদ এর দুধ নেই, কংগ্রেসের‌ও ভোট নেই”

তখন বিজেপি হয়নি, ছিল জনসঙ্ঘ। তারা এক লোকসভা নির্বাচনের আগে অদ্ভুত একটি ছড়া স্লোগান দেওয়ালে দেওয়ালে লিখেছিল-

advertisement

“বিড়ি মে তামাকু হ্যায়, কংগ্রেস‌ওয়ালা ডাকু হ্যায়”

ইন্দিরা গান্ধি মারা গিয়েছেন। ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দেওয়ালে দেওয়ালে কংগ্রেস কর্মীরা ছড়া লিখলেন-

“যব তক সুরজ চাঁদ রহেগা, ইন্দিরা তেরা নাম রহেগা”

নির্বাচনের সময় এইসব ব্যাঙ্গাত্মক ছড়া যে কেবল দলকে উদ্দেশ্য করেই লেখা হতো তা নয়। বরং সৃষ্টিশীলতা অনেক সময়‌ই ব্যক্তি আক্রমণের সীমাও পেরিয়ে গিয়েছে। যেমন বামেরা একসময় ভোটের আগে ছড়া লিখেছিল-

advertisement

“ইন্দিরা মাসি বাজায় কাঁসি/ প্রফুল্ল বাজায় ঢোল/ আয় অতুল্য ভাত খাবি আয়/ কানা বেগুনের ঝোল…”

পাল্টা কটাক্ষ করে কংগ্রেস জ্যোতি বসু ও প্রমোদ দাশগুপ্তকে নিশানা করে দেওয়ালে ছড়া লেখে-

“অনিলা মাসি বাজায় কাঁসি/ জ্যোতি বাজায় ঢোল/ আয় প্রমোদ ভাত খাবি আয়/ মাগুর মাছের ঝোল”

২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে তৃণমূল বাংলার দেওয়ালে দেওয়ালে ছড়া লিখেছিল-

advertisement

“মোদি তুমি দুষ্টু লোক/ তোমার চুল-দাড়িতে উকুন হোক”

আরও পড়ুন: চুল্লির জ্বলন্ত ইট গায়ে পড়ে মহিলা শ্রমিকের মৃত্যু, গুরুতর আহত ১

ভোট রাজনীতির ময়দানে ব্যাঙ্গাক্ত মজার মজার ছড়ার উদাহরণ তুলে ধরে শেষ করা যাবে না। যদিও সেই চল ধীরে ধীরে কমেছে। গত এক দশকে মন ছুঁয়ে যাওয়া ভোটের ছড়া গাঁটে গোনা কয়েকটা নজরে পড়ার মতো তৈরি হয়েছে। আসলে ভোট প্রচারের ধরনটাই অনেক বদলে গেছে। এখন দেওয়াল লিখনের থেকেও রাজনৈতিক দলগুলি বড় বড় ফ্লেক্স, ব্যানারের দিকে নজর দিচ্ছে বেশি। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ভোট প্রচারে একটা বড় জায়গা দখল করেছে। তবে এটাও বলার, বাংলার রাজনীতিতে ভোট প্রচারে ছড়া ও ব্যঙ্গচিত্রের চল বামপন্থীদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাঁদের স্কোয়াডে বহু কবি, লেখক ও শিল্পী থাকার কারণেই হয়তো এমনটা ঘটে থাকবে। তবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সেই হারিয়ে যেতে বসা রাজনৈতিক ধারার কিছু নমুনা আবার নজরে আসছে সিপিএমের হাত ধরে।

advertisement

নদিয়া জেলার বিভিন্ন গ্রামে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দেওয়াল লিখতে গিয়ে নতুন নতুন ছড়ার আশ্রয় নিতে দেখা যাচ্ছে বাম কর্মীদের। তার মধ্যে একটি নজর করা ছড়া হল-

“বলছে মানুষ, বলছে গ্রাম/ দিকে দিকে ফিরুক বাম”

ভোট যুদ্ধের ময়দানে হিংসা-হানাহানির থেকে ছড়া ও মজার ব্যঙ্গচিত্রের লড়াই আমজনতাও বেশ উপভোগ করে। খেয়াল করলে দেখবেন, কোন‌ও রাজনৈতিক দলের মজার ছড়া যদি মন ছুঁয়ে যায় তবে ভোট মিটে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পরেও এলাকার ছোট ছোট বাচ্চাদের মুখে সেই ছড়া ঘুরে ফিরে বেড়ায়। হয়তো এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার পর্ব যত এগোবে রাজনৈতিক দলগুলির হাত ধরে সেই সুস্থ লড়াইয়ের পরিসর আবার ফিরে আসবে, প্রসারিত হবে সৃষ্টিশীলতার লড়াই। অন্তত এই শুভ আশাটুকু রাখতে ক্ষতি কী!

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
বাজারে ব্যাপক চাহিদা, তবুও মাথায় হাত! পান চাষ করে কেন সমস্যায় চাষিরা?
আরও দেখুন

মৈনাক দেবনাথ

বাংলা খবর/ খবর/নদিয়া/
Creative Election Battle: ভোট যুদ্ধে হারিয়ে যেতে বসা ছড়ার চল ফিরছে সিপিএমের দেওয়াল লিখনে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল