প্রসঙ্গত, দুর্গাপূজায় যেমন বাঙালিরা মেতে ওঠেন, ঠিক তেমনই শান্তিপুরে কাঁসারী পাড়া অঞ্চলের মানুষজন মেতে ওঠেন এই গণেশ জননী পুজোকে কেন্দ্র করে (Nadia News)। উল্লেখ্য যে, এই গণেশ জননী পুজোর সূত্রপাত শান্তিপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পরিচালিত অন্নপূর্ণা পুজোকে কেন্দ্র করেই। একসময় সাহা পরিবারের সদস্যরা অন্নপূর্ণা পুজোর দায়িত্বভার সুবর্ণ বণিক এবং কংস বণিকদের হাতে তুলে দেন। আর তাঁরা যৌথ উদ্যোগে পুজোর নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। প্রচলিত লোককথায়, আনুমানিক দেড়শো বছর আগে অন্নপূর্ণা পুজোর সময় অনুষ্ঠিত এক যাত্রা পালাকে কেন্দ্র করে সুবর্ণ বণিক এবং কংস বণিকের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। তাই অন্নপূর্ণা পুজোর তিনদিনের মাথায় কংস বণিক সম্প্রদায়ের মানুষেরা পুজো কমিটি থেকে বেরিয়ে এসে গণেশ জননীর পুজোর প্রচলন করেন।
advertisement
তৎকালীন কংস বণিক সম্প্রদায়ের নিমু দত্ত, ইন্দু দত্ত, মুরারী দত্ত প্রমুখের নেতৃত্বে এই পুজোর সূত্রপাত হয়। প্রসঙ্গত, মা অন্নপূর্ণার সঙ্গে গণেশ জননী বিগ্রহের বেশ সাদৃশ্য রয়েছে। এখানেও দেবীর ডানপাশে মহাদেব এবং বামপাশে নারদের অবস্থান। আর গণেশ জননীর ক্ষেত্রে মায়ের কোলে গণেশ বসে রয়েছেন। মোট পাঁচ দিন ধরে চলে মায়ের আরাধনা। যথেষ্ট আড়ম্বরের সঙ্গেই পুজো হয় গণেশ জননীর। থাকে পুজো প্রাঙ্গণে যথেষ্ট ভোগের আয়োজন এবং প্রায় পুজোর প্রত্যেক দিনেই কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া (Nadia News)। শান্তিপুরের বাইরে থেকে শিল্পীরা এসে অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। তবে পুজোর শেষ লগ্নে অর্থাৎ মায়ের পুজোর শেষে গণেশ জননী মাতার কোলে বিরাজমান গণেশকে কোলে নেবার রীতি রয়েছে। যাঁরা নিঃসন্তান দম্পতি রয়েছেন, তাঁরা সন্তান লাভের জন্য পুজোর শেষে গণেশকে নিজের কোলে তুলে নেন। এছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের দিন শান্তিপুরে নগর পরিক্রমার সঙ্গে আলোক সজ্জা এবং বাজনা সহ বিগ্রহকে বিসর্জন দেবার রীতি রয়েছে।
Mainak Debnath