তিব্বতি কার্পেটের বাজার মূলত বিশ্বের শীতপ্রধান দেশ গুলিতে। উত্তরপ্রদেশের বেনারসে এই কার্পেট তৈরির কোম্পানিগুলি রয়েছে। সেখান থেকেই কার্পেট বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয় । মূলত দুবাই, কানাডা, ইউরোপীয় দেশগুলিতে রফতানি করা হয়ে থাকে । তিব্বতি কার্পেট এখনও হাতে বোনা হয়। ভারতবর্ষের উত্তরপ্রদেশের বেনারস ও পশ্চিমবঙ্গের মালদহে এই কার্পেট বোনার শ্রমিক রয়েছেন ।এছাড়াও নেপালে তৈরি হয়। এই সমস্ত জায়গায় থেকে কার্পেট তৈরির পর বেনারসের ভাদোহি মির্জাপুরের কোম্পানিগুলিতে পাঠানো হয়। সেখানে কার্পেটের ফিনিশিং, রং দেওয়ার কাজ হয়। তারপর সেগুলি রফতানি করা হয়।
advertisement
দেশের অন্যান্য জায়গার কার্পেট তৈরির শ্রমিকের থেকে মালদহের শ্রমিকদের দক্ষতা বেশি। এক সময় মালদহের শ্রমিকেরা বেনারসে গিয়ে কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে বেনারসে একটি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। মালদহের ন’ জন শ্রমিক মারা যান। তার পর থেকে শ্রমিকেরা কাজে যেতে চাইছিলেন না। সেই সময় থেকেই মালদহে থেকে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে বেনারসের কোম্পানি গুলি মালদহে শাখা অফিস তৈরি করেছে। শাখা অফিস থেকে শ্রমিকদের কাঁচামাল সরবরাহ করা হয়। আবার শাখা অফিসই তৈরি হওয়া কার্পেট কিনে নেয়।
আরও পড়ুন : ভাঙনে গঙ্গাপ্রাপ্তি বিদ্যালয়ের, মালদহে একটু একটু করে নদীর গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে স্কুলবাড়ি
বর্তমানে শ্রমিকেরা এক মিটার কার্পেট তৈরির মজুরি পান প্রায় ৩ হাজার ২০০ টাকা । মালদহের সাতটারি গ্রামে একসময় ভাল তাঁতের কাপড় তৈরি হত । সাতটারির তাঁতের কাপড়ের যথেষ্ট সুনাম ছিল । ধীরে ধীরে তাঁতের তৈরি কাপড়ের চাহিদা কমতে থাকে। বন্ধ হতে থাকে সাতটারির তাঁত শিল্প। সেই সময় থেকেই এই এলাকার তাঁতশিল্পীরা বিকল্প কাজ হিসাবে কার্পেট তৈরিকে বেছে নেন । তাঁত বোনায় দক্ষ শ্রমিকদের এই কাজে অনেকটাই সুবিধা হয়। বর্তমানে গোটা গ্রাম জুড়ে ধীরে ধীরে কার্পেট তৈরির মেশিন বসতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন : বিনয়-বাদল-দীনেশের শিক্ষাগুরুর কর্মভূমি আজ আগাছায় ঢাকা, নিত্য বসে তাস ও নেশার আসর
স্থানীয় শ্রমিকরা মিলে ইতিমধ্যে একটি কমিটি তৈরি করেছে তাঁদের উন্নয়নের জন্য । মালদহ সদর মেঘা কার্পেট ক্লাস্টার তন্তুবায় নামে এই সংগঠন করা হয়েছে । এই সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে কার্পেট ক্লাসটার হাব তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। সাতটারি গ্রামের পাশেই একটি জায়গা দেওয়া হয়েছে কার্পেট হাব তৈরির জন্য। মাঝে শেষ জায়গাটিতে কিছু কাজ শুরু হয়েছিল। বর্তমানে অজানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় সে কাজটি চালু করার জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে এমনটাই জানিয়েছেন মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন।