আরও পড়ুন Train Time: সিউড়ি থেকে অন্ডাল বিশেষ ট্রেন, দেখে নিন সময়সূচী
মালদহ শহরের বিএস রোডের দুই ধারে শতাধিক সোনার দোকান রয়েছে। ছোট বড় এই সোনার দোকান গুলিতে অলঙ্কার তৈরির কাজ করে কারিগরেরা। সোনা বা রুপোর অলঙ্কার তৈরির সময় সেগুলি গলাতে হয়। তারপর সেগুলি দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের অলঙ্কার তৈরি হয়। অলংকার তৈরির সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সোনা বা রুপোর অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে কারিগরদের শরীরে। বা কারখানার ভেতরেও সেগুলো পড়ে থাকে। কারিগড়েরা বাইরে বেরিয়ে গা হাত ঝাড়া দিলে সেগুলো দোকানের সামনেই পড়ে যায়। এমনকি ব্যবসায়ীরা দোকান পরিষ্কার করার সময় সেগুলো বাইরে ফেলে দেন। ধুলোর সঙ্গে মিশে থাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা। রাতে দোকান ও কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাই পরের দিন সকাল হতেই ধুলো কুড়ুনিরা ছুটে যান সেগুলো কুড়াতে। প্রতিদিন দলবেঁধে রাস্তার সমস্ত ধুলো কুড়িয়ে নিয়ে চলে যায় তারা। সেই ধুলো গুলি জলে ভাল করে ধুয়ে বার হয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সোনা বা রুপোর কণা। মালদহ শহরে ভাড়া বাড়ি নিয়ে থাকেন এই পরিবার গুলি।কয়েক বছর ধরে ২০ থেকে ২৫ টি পরিবার রয়েছে এখানে। এদের বাড়ি মহারাষ্ট্রের নাসিক।
advertisement
আরও পড়ুন Birbhum News : সোনাঝুরিতে তৈরি হচ্ছে রিসর্ট, বেনিয়মের অভিযোগ
এই এলাকার অধিকাংশ মানুষই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। শুধু মালদহ নয়, তাদের সম্প্রদায়ের মানুষেরা ধুলগড়ানোর জন্য রাজ্যের বিভিন্ন বড় বড় শহরে রয়েছেন। বছরের নয় মাস তারা এখানে থাকেন। বাকি তিন মাস গ্রামে ফিরে যান। নয় মাস এক এক জন ধুলো কুড়িয়ে ভাল রোজগার করে। প্রতিমাসে গড়ে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা রোজগার হয়।
তবে আগের মতো এখন আর ধুলোর মধ্যে সোনা পাওয়া যায় না, এমনটা স্বীকার করছেন তারা নিজেই। কারণ হিসাবে তাদের দাবি, আগে সোনার দোকানে কাঁচের দরজা ছিল না। দোকানের ভেতরে কাজ হওয়ার সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সোনার কণা বাইরে এসে উড়ে পড়তো। এখন কাচের দরজা তৈরি হওয়ায় বাইরে কিছুই বেরোচ্ছে না।
এমন কী, মালদহ শহরে বেশ কয়েকটি বড় বড় সোনার শোরুম হয়ে গিয়েছে। যার জেরে ছোট ও মাঝারি দোকানগুলিতে কাজ অনেক কমে গিয়েছে। ধুলো কুড়িয়ে রোজগার হতে পারে তার প্রমাণ মহারাষ্ট্রের নাসিকের এই পরিবারগুলি। পূর্বপুরুষ ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তারা। এই কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ করতে পারেন না পরিবারের কেউ। এমনকি বর্তমান প্রজন্ম এই কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। অন্য কোন কাজ তাদের দ্বারা সম্ভব নয়। তাই রোজগার কমলেও নিয়মিত ধুলো কুড়িয়ে চলেছে।
হরষিত সিংহ