মালদহের হবিবপুর ব্লকের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম তিলাসন। অবিভক্ত ভারতে এখানে রায় পরিবারের জমিদারি ছিল। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর বাংলা ভাগের জেরে অধিকাংশ জমিদারি সেকালের পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমান বাংলাদেশে পড়ে যায়। তবে জমিদারের বিশাল অট্টালিকা ভারতের অংশেই থাকে। ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তের ৫০ মিটারের মধ্যে রয়েছে জমিদারের বাড়ি। সেখানেই রয়েছে পুরনো ঠাকুর দালান।সময়ের সাথে জমিদারি চলে গিয়েছে। সুবিশাল বাড়ির বিভিন্ন অংশ জুড়ে ধরেছে ফাটল। কিন্তু এখনওঅক্ষুণ্ণ রয়েছে পুজোর ঐতিহ্য। বর্তমান প্রজন্ম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এই প্রাচীন পুজো।
advertisement
আরও পড়ুন : পুজোর চারদিন গ্রামেই অধিষ্ঠাত্রী দেবীকেই পুজোর করা হয় এই গ্রামে
২২২ বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে এই জমিদার পরিবার ব্যবসায়িক সূত্রে এখানে এসেছিল। জমিদারি কিনে তাদের রাজত্ব শুরু করেন। আড়ম্বর নয়, বর্তমান প্রজন্মপ্রাচীন রীতি নীতি মেনে নিষ্ঠার সাথে পুজো করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুরনো নিয়ম মেনে এখনও পুজোর আমন্ত্রণ পত্র বাংলা ও ইংরেজিতে ছাপা হয়। সেই আমন্ত্রণপত্র দিয়ে নেমন্তন্ন করা হয় সকলকে।
আরও পড়ুন : প্লাস্টিক বর্জন করার বার্তা নিয়েই সাজছে হাওড়ার এই মণ্ডপ
প্রাচীন জমিদার বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরলেও এখনো দেওয়ালে রয়েছে বিশাল কুমিরের ছাল, যা পরিবারের পূর্বপুরুষরা শিকার করেছিলেন। এখনো এই পুজো উপলক্ষে চারদিন থাকে পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সীমান্তবর্তী গ্রামে এই পুজোতে অংশগ্রহণ করতে আসেন মানুষ।পুজোতে ভোগ রান্না থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু করেন উত্তরপ্রদেশের মৈথিলি ব্রাহ্মণরা।দশমীর দিন পুনর্ভবা নদীতেই প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। সময়ের পরিবর্তনে সঙ্গে কিছুটা হলেও পুজোর জৌলুস কমেছে। তবে রয়ে গেছে ঐতিহ্য। অবিভক্ত বাংলা থেকে বাংলা ভাগের জ্বলন্ত ইতিহাস বয়ে নিয়ে যাচ্ছে সীমান্তবর্তী জমিদার বাড়ির এই পুজো। তবে এই পুজোর ঐতিহ্য জৌলুস আর কতদিন টিকে থাকবে তা নিয়ে সংশয়। কারণ ইচ্ছে থাকলেও সীমান্তবর্তী এলাকায় বাধা নিষেধ অনেকটাই সমস্যা তৈরি করতে পারে আগামীতে।





