সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কেমপা হোন্নাইয়া'র যখন ৯ বছর বয়স (তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র), সেই সময়ই তাঁর চোখ জুড়ে অন্ধকার নেমে এসেছিল! দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, দৃষ্টিশক্তি ফিরবেনা! চোখ জুড়ে আঁধার নেমে এলেও, জীবনজুড়ে "আঁধার" নামতে দেননি কেমপা। এক এক করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি অতিক্রম করেছেন। কন্নড় সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। ইউজিসি নেট (UGC NET) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অধ্যাপনায় যোগ দিয়েছেন। ততদিনে তাঁর জীবনে এসেছেন স্ত্রী অচিন্ত্যা। তিনিই বদলে দিলেন, কেমপা'র যাত্রাপথ! শুরু হল নতুন লড়াই। আইএএস (Indian Administrative Service) হওয়ার।
advertisement
পণ্ডিতেরা বলেন, একজন নারীই পারেন পুরুষের জীবন বদলে দিতে! দিনে দশ ঘণ্টা করে স্বামীকে বই পড়ে শোনাতেন অচিন্ত্যা। অডিও নোট তৈরি করে দিতেন। একাধিকবার পরীক্ষা দেওয়ার পর অবশেষে সফল হলেন কেমপা হোন্নাইয়া। ২০১৬ সালে UPSC (Union Public Service Commission) পাস করলেন একেবারে টপার হিসেবে। পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের ২০১৭ সালের আইএএস অফিসার হলেন।
আইএএস 'প্রবেশনার' হিসেবে কেমপা হোন্নাইয়া কাজ করেছেন হুগলিতে। তারপর, রাজ্যের নারী-শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দফতরের ওএসডি (Officer On Special Duty) ছিলেন। সেখান থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক হিসেবে তাঁর বদলি হয়েছে। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, "মেদিনীপুরে এসে খুব ভালো লাগছে। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।" রোদচশমা ব্যবহার করা কেমপা হোন্নাইয়া'কে দেখে মনে হবে না, তিনি একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন। আর, তাঁর কাজেও যে তা প্রকাশ পায়না, তা বলাই বাহুল্য! জেলাবাসীও তাঁদের এই নতুন অতিরিক্ত জেলাশাসক'কে শুধু স্বাগত-ই জানাননি, অন্তর থেকে কুর্নিশ-ও জানিয়েছেন।
Partha Mukherjee