TRENDING:

Durga Puja Travel: গনগনি ! শোনা যায় এখানে পাণ্ডবরা থেকেছেন ! পুজোয় বেড়িয়ে আসুন বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে

Last Updated:

Durga Puja Travel | Gangani: পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা ব্লকের দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#মেদিনীপুর:  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখতে সারা বিশ্ব থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক যান (Durga Puja Travel) । কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, খোদ বাংলাতেই রয়েছে অবিকল এমনই একটি জায়গা। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার গনগনিকে অনায়াসেই বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বলা যায়।
photo source local 18
photo source local 18
advertisement

শীলাবতী নদীর পাশে অবস্থিত এই অঞ্চলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য (Durga Puja Travel) কোনও অংশেই কম নয়।গড়বেতা স্টেশনের অদূরে গনগনি। সপ্তাহান্তে ভ্রমণের আদর্শ জায়গা। প্রকৃতিই এখানে শিল্পী। তার আপন খেয়ালে সেজে উঠেছে শিলাবতী নদীর তীরে গড়বেতার অন্যতম পর্যটনস্থল গনগনি।

নিসর্গের নিরিখেই এই এলাকাটিকে ‘বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’(Durga Puja Travel)  বলেন বহু পর্যটক। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তেই গনগনিকে পর্যটন কেন্দ্রের রুপ দিতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য পর্যটন দপ্তর। শিলাবতী নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলার একমাত্র গিরিখাদ গনগনি।

advertisement

শিলাবতী নদী, ছোটনাগপুরের মালভূমিতে উৎপত্তি শিলাবতি নদীর, পুরুলিয়ার পুঞ্চা শহরের কাছে(Durga Puja Travel) । সেই শিলাবতী নদী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া আর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে। ঘাটালের কাছে জোট বেঁধেছে দ্বারকেশ্বরের সঙ্গে। এই ছোট্ট শিলাবতী প্রায় সারা বছর গা এলিয়ে শুয়ে থাকে, অত্যন্ত রুগ্ন, শীর্ণ চেহারা তার। কিন্তু বর্ষা এলেই তার রুদ্র রূপ, ভাসিয়ে দেয় চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই আর ঘাটাল।

advertisement

এহেন শিলাবতীর কেরামতিতে সৃষ্টি এই গনগনির গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন(Durga Puja Travel) । এই গনগনিতেও শিলাবতীর সেই পরিচিত রূপ,গনগনি আজ থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন থেকে দশ হাজার বছরের মধ্যবর্তী সময়ের সঞ্চিত কাঁকুরে পলল স্তরের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমান্বয়ে ঋতুগত  ভৌমজলস্তরের ওঠা নামার ফলে আদ্রতা ও শুষ্কতার প্রভাবে তৈরি হওয়া ল্যাটেরাইটের প্রকাশ।

advertisement

শিলাবতী নদীর ডানদিকের পাড় বরাবর দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ৩০ মিটার উঁচু এই ডাঙার খাড়া ঢাল বরাবর গভীর ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট অজস্র ছোট ছোট নালা এবং নালাগুলির সংযুক্তির ফলে সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য গালির সমন্বয়ে এই ক্ষয়িষ্ণু ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।

গড়বেতা শহরটি বেশ উঁচু(Durga Puja Travel) । পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। বর্ষায় ফুলে ফেঁপে ওঠা নদী গিয়ে আছড়ে পড়ে পাশের উঁচু টিলায়। পাশাপাশি বৃষ্টিতেও ভূমিক্ষয় হয়। সেই ভূমিক্ষয় থেকেই তৈরি হয়েছে ছোট ছোট টিলা, গর্ত, খাল। তাতে আবার রঙের বৈচিত্র্য। কোথাও সাদা, কোথাও লালচে বা ধূসর। কোনও অংশ দেখে আবার মনে হবে যেন মন্দির, আবার কোনও অংশ মনুষ্য আকৃতির, কোথাও বা টিলা গুহার আকার নিয়েছে।

advertisement

ভূগোলের ছাত্রছাত্রী থেকে গবেষক, ভূমিক্ষয় নিয়ে গবেষণার জন্য অনেকেই এখানে আসেন। আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষ আসেন ভূমিক্ষয়ের ফলে তৈরি প্রকৃতির শিল্পকর্ম দেখতে(Durga Puja Travel) । শিলাবতীর তীরে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের মুহূর্তে গনগনির রূপ খুবই মোহময়ী।

গড়বেতা স্টেশন থেকে যে রাস্তা হুমগড়ের দিকে গেছে, সেই পথে খানিক গিয়ে ডান দিকে গনগনি। বোর্ডে পথনির্দেশ দেওয়া। লাল মাটির রাস্তা পৌঁছে দিয়েছে চুয়াড় বিদ্রোহ খ্যাত গনগনির মাঠে। (Durga Puja Travel) সামাজিক বনসৃজনের ফসল কাজু আর শাল-পলাশের বন দু’ পাশে রেখে এখানে আসতে আসতে বেলা অনেকটা গড়িয়ে গেল। শীতের সূর্য পশ্চিমে হেলেছে কিছুটা।

অকুস্থলে আসতেই চোখের ফ্রেমে বন্দি হল এক আশ্চর্য ভূমিরূপ(Durga Puja Travel) , প্রকৃতির শৌর্য আর খেয়ালিপনার এক বিস্ময়কর নিদর্শন। মনুষ্যকৃত সৃষ্টি গুলোকে যতই পৃথিবীর আশ্চর্য বস্তু বলে তকমা দিই না কেন, প্রকৃতির সৃষ্টির কাছে সে সব হার মানতে বাধ্য। মুহূর্তে মনে হল, সত্যিই তো, আমাদের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন নেই তো কী হয়েছে, গনগনি তো আছে। সার্থকনামা গনগনি।

শীতের দুপুরে গনগনি যেন সত্যিই রঙের লাবণ্যে গনগন(Durga Puja Travel)  করে। গোটা এলাকাটা রক্তিম আভায় জ্বলছে। প্রকৃতিতে এখন রঙের ফোয়ারা। আকাশ রয়্যাল ব্লু, গিরিখাতে হরেক শেডের লাল, তার ওপর সবুজ ঘাসের পরত। শিলাবতীর সবুজ নীল জল আর হলুদ বালুতট, দু পারে সবুজের ঘেরাটোপ, আলু চাষের জমি। রঙের এই অদ্ভুত বাহারিয়ানা।

লম্বায় দেড় দু কিলোমিটার তো হবেই। ল্যাটেরাইট শিলায় তৈরি এই ভূখণ্ড। যুগ যুগ ধরে চলেছে প্রকৃতির খেলা। শিলাবতী আজ শীর্ণ, কিন্তু চিরকাল তো তার এই রূপ ছিল না। তার জলোচ্ছ্বাস ল্যাটেরাইট শিলায় আঘাত করেছে নিয়মিত। প্রবল ঝড় বাতাস বয়ে গেছে এই মাঠ দিয়ে। ফলে সময়ের প্রবাহে তৈরি হয়েছে নানা প্রাকৃতিক ভাস্কর্য।

সেই সব ভাস্কর্য আমাদের কল্পনায় নানা রূপ পেয়েছে(Durga Puja Travel) । কেমন সে সব রূপ ? ভালো ভাবে বোঝার জন্য বাঁধানো রঙিন সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতে হয়। শিলাবতীর পাড় ধরে এগিয়ে চলা। নজর ডান দিকে। কখনও মনে হচ্ছে এখানে একটা দুর্গ ছিল। সেই দুর্গ আজ ধ্বংস, রয়ে গেছে তার প্রাচীর।

এখানে ওখানে প্রচুর গহ্বর। কোনও কোনও জায়গায় ভূমিখাত (Durga Puja Travel) এমন রূপ নিয়েছে, যেন মনে হচ্ছে বাড়ি বা মন্দিরের থাম বা দালান। এই গিরিখাতের দেওয়ালে দেওয়ালে যে রূপ তৈরি হয়েছে তা কোথাও যেন দুর্গা, কোথাও বা শিব, কোথাও আবার ডাইনোসর, তো কোথাও বুনোমোষ। মানুষও আছে। অভিনব, অসামান্য সব কারুকলা !

এই গনগনিকে ঘিরে রয়েছে এই অঞ্চলের লোককাহিনি, রয়েছে ইতিহাস।এখানকার মানুষজনের সঙ্গে আলাপ করলে তাঁরা আপনাকে মহাভারতের বকরাক্ষসের কাহিনিটা বলবেই। সেই ইতিহাসের শিকড় পৌরাণিক যুগে মহাভারত অব্দি বিস্তৃত। অজ্ঞাতবাসে থাকার সময় পঞ্চপাণ্ডব এখানে নাকি কিছু দিন কাটিয়েছিলেন।

পাণ্ডবরা (Durga Puja Travel) বনবাসে থাকাকালীন একদিন এসে পড়েছিলেন এই গনগনিতে। এই তল্লাটে তখন দাপিয়ে বেড়াত বকাসুর নামের রাক্ষস। কোনো একজন গ্রামবাসীকে রোজ তার হাতে তুলে দিতে হত নৈবদ্য হিসেবে। এর অন্যথা হলে, সমস্ত গ্রাম তছনছ করে ছাড়তো বকাসুর। পাণ্ডবরা এইখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন এক ব্রাহ্মণ পরিবারে। বকাসুরের খাদ্য হিসেবে উৎসর্গ হওয়ার জন্য একদিন সময় এলো এই পরিবারের।

মাতা কুন্তীর(Durga Puja Travel)  নির্দেশে ভীম এই পরিবারের সদস্য হয়ে নিবেদিত হলো বকাসুরের কাছে। শুরু হলো প্রবল যুদ্ধ বকাসুরের সাথে শক্তিশালী ভীমের। অবশেষে ভীমের হাতেই বধ হলো বকাসুর। তাদের যুদ্ধের প্রতাপে এখানকার মাটি কেঁপে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, শিলাবতীর এই গিরিখাত আসলে বকরাক্ষস আর ভীমের মধ্যে যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়েছিল তার ফলেই তৈরি হয়েছিল।এতো গেলো পৌরাণিক কাহিনী।

চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ইতিহাসে

চুয়াড় লায়েক বিদ্রোহ তো বেশি দিনের কথা নয়(Durga Puja Travel) । মোটামুটি দু শো বছর আগের। বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক অচল সিংহ তাঁর দলবল নিয়ে আস্তানা গেড়েছিলেন গনগনির গভীর শালবনে। রপ্ত করেছিলেন গেরিলা লড়াইয়ের কলাকৌশল। ইংরেজদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিলেন।

ইংরেজ বাহিনী নাকি কামান দেগে গোটা শালবন জ্বালিয়ে দিয়েছিল(Durga Puja Travel) । তবু দমানো যায়নি অচলকে। চোরাগোপ্তা আক্রমণ চালিয়ে যান তিনি। অবশ্য শেষরক্ষা করতে পারেননি। বগড়ির শেষ রাজা ছত্রসিংহ ধরিয়ে দেন অচলদের। এই গনগনির মাঠেই নাকি অচল ও তাঁর সঙ্গীদের ফাঁসি দিয়েছিল ইংরেজরা।

গনগনির এই বেহড় দেখে মনে হচ্ছিল বন্দুক হাতে বাগী হওয়ার এমন প্রশস্ত জায়গা ভূ ভারতে কমই আছে(Durga Puja Travel) । পশ্চিমে অনেকটা নেমে গেছে সূর্য। এবার তার ঘরে ফেরার পালা। নীল আকাশের মাঝে উঁকি দিচ্ছে গোলাপি আভা। সেই গোলাপি ক্রমে ক্রমে সিঁদুররাঙা হল। আকাশের লালচে সিঁদুর আর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন এর লাল থেকে গেরুয়া, সব মিলেমিশে কেমন একটা খুনখারাপি রঙের ছটা।

কিভাবে যাবেন ম্যাপ  https://goo.gl/maps/EvS7uzAeVNyAi91B8

সড়কপথে, যদি আপনি পশ্চিমবঙ্গের (Durga Puja Travel) গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের দিকে বেড়াতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে মেদিনীপুর শহর থেকে ৬০ নং জাতীয় সড়ক ধরে শালবনী র উপর দিয়ে মনোরম শাল জঙ্গল দেখতে দেখতে সোজা চন্দ্রকোনা রোডের উপর দিয়ে গড়বেতা শহরে পৌঁছাবেন।

ট্রেনপথে, মেদিনীপুর স্টেশন(Durga Puja Travel)  থেকে ট্রেন ধরে এক ঘণ্টার মধ্যে গড়বেতা। সেখান থেকে ২.১ কিমি গনগনি।

বাসে করে, মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড (Durga Puja Travel) থেকে বাসে করে গড়বেতা। সেখান থেকে ২.১ কিমি গনগনি।

গনগনিতে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে(Durga Puja Travel)  পর্যটকদের সুবিধার্থে। তবে গনগনিতে খাওয়া দাওয়ার ভালো ব্যবস্থা নেই। সেখান থেকে মাত্র ২ কিমি দূরে গড়বেতা শহর। প্রয়োজনীয় সব জিনিসই পাওয়া যাবে সেখানেই।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
সাগরে বসেই মিলবে টাটকা মাল! কেক, প্যাটিস আনতে আর দৌড় নয়
আরও দেখুন

Partha Mukherjee

বাংলা খবর/ খবর/Local News/
Durga Puja Travel: গনগনি ! শোনা যায় এখানে পাণ্ডবরা থেকেছেন ! পুজোয় বেড়িয়ে আসুন বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল