পুজোর সপ্তাহ পাঁচেক বাকি থাকলেও, এখনও তেমন জমে ওঠেনি দুর্গাপুরের (Durgapur) বাজারগুলি। হাতেগোনা কিছু মানুষই এখনও পর্যন্ত পুজোর বাজার সেরে। ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পুজো মানেই শপিং, নতুন পোশাক। পুজোর একমাস বাকি থাকতেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন বড়বাজারগুলি, অর্থাৎ বেনাচিতি বাজার দুর্গাপুর স্টেশন বাজারে লোকজনের ভিড় থিকথিক করে। কিন্তু চলতি বছরে সেই চেনা ভিড় উধাও। বিশেষ আনাগোনা নেই মানুষের। বস্ত্র বিপনী, প্রসাধনীর দোকানগুলিতে নেই ব্যস্ততা।
advertisement
এই ছবি বলে দিচ্ছে, শিল্পাঞ্চল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মহামারীর ধাক্কা, লকডাউনের জের। স্বাভাবিকভাবেই, মন্দার আশঙ্কায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। এখনও পর্যন্ত, বাজারে অন্য বছরের মতো চেনা ছবি দেখতে না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দোকান ভর্তি সম্ভার সাজানো থাকলেও, ক্রেতার দেখা সেই অর্থে মিলছে না।
অনেকেই বলছেন, বাজারে মন্দার অন্যতম কারণ করোনা (Coronavirus) মহামারী। প্রথমত করোনা মহামারীর লকডাউনিয়ে জেরে বহু মানুষ তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। ভাইরাসের দেড় বছরের তাণ্ডবে অর্থসংকটে ভুগছেন বহু মানুষ। তার ছাপ পড়ছে পুজোর বাজারে। অর্থের অভাবে পুজোর বাজারের বাজেট কাটছাঁট করেছেন অনেকেই। তাছাড়াও মাথার ওপর খাঁড়ার মত ঝুলছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। ফলে অনেকেই সাবধানতা অবলম্বন করছেন। ভিড় এড়িয়ে চলছেন। তাই পুজোর বাজারে মানুষের সেই চেনা ছবি চলতি বছরে দেখা যাচ্ছে না এখনও পর্যন্ত।
দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের এক বড় বস্ত্র বিপনী মালিক জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরে গণেশ পুজোর অনেক আগে থেকেই পুজোর বাজার জমে উঠতে শুরু করে মহালয়ার আগেই সিংহভাগ কেনাকাটা সেরে ফেলেন মানুষজন। কিন্তু এবছর সেই অর্থে বিক্রি-বাট্টা নেই। দোকান ভর্তি সম্ভার থাকলেও, ক্রেতার অভাবে দোকানেই পড়ে থাকছে জিনিসগুলি। একই অবস্থা দুর্গাপুর বেনাচিতি বাজারেও।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার ঠিক থাকলেও, পুজোর বাজার এখনও পর্যন্ত সেই ভাবে জমজমাট হয়ে ওঠেনি। অন্য বছরের তুলনায় অল্প সংখ্যক মানুষই কেনাকাটা করেছেন। তাদের মতে, করোনা ভাইরাসের দ্বৈত প্রভাবে বাজারে মন্দা চলছে। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কারণ তাদের সারা বছরের ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ভর করে, দুর্গাপুজোর এই সময়ের উপরে। কিন্তু এখন সমস্ত উৎসবই যথেষ্ট বিধিনিষেধ মেনে পালন করতে হচ্ছে। তাছাড়াও মানুষজন করোনার ভয়ে আতঙ্কিত রয়েছেন। অর্থ সংকটে ভুগছেন অনেকে। সবমিলিয়ে পুজো আর মাত্র একমাস বাকি থাকলেও, দুর্গাপুরের বড় বাজারগুলি কার্যত ফাঁকা বললেই চলে।
ব্যবসায়ীদের আশা, এই অন্ধকার দিন কাটবে। দেবীর আগমনের আগে জমে উঠবে বাজার। কিছুটা দেরিতে হলেও মানুষজন বাজারে ভিড় করবেন। কারণ, উমার আরাধনায় বাঙালি কোনভাবেই খামতি রাখতে চায় না। তাই হাতে অল্প দিন বাকি থাকলেও, এখনও আশা ছাড়ছেন না ব্যবসায়ীরা।
Nayan Ghosh