মাস বদল হলেও, এখনও কাটেনি শ্রাবণ ধারা। ক্যালেন্ডার বলছে শরতের আগমন হয়েছে। কিন্তু আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের বদলে, কালো মেঘের ঘনঘটা। শিউলির গন্ধ এখনও নেই বাতাসে। তবে পুজোর আমেজ বনেদি পরিবারগুলিতে। পুজোর এখনো কয়েক মাস বাকি। তারআগেই জোর কদমে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। শুরু হয়েছে মন্দির সংস্কারও।
advertisement
কাঁকসা ব্লকে রয়েছে অনেকগুলি বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজো। বনেদি বাড়ির দুর্গা মন্দিরগুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে উমার বাপের বাড়ি আসার প্রস্তুতি। বনেদি বাড়ির মন্দিরে মন্দিরে শুরু হয়েছে দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ। খড়ের কাঠামোর ওপরে চলছে মাটি দেওয়ার কাজ।
বনেদি বাড়ির মৃৎশিল্পীরা বংশানুক্রমে প্রতিমা গড়ার কাজ করে চলেছেন এইসব বনেদি বাড়িগুলিতে। কেউ কেউ তিন পুরুষ ধরে একই পরিবারের প্রতিমা গড়ে চলেছেন। এই সমস্ত মৃৎশিল্পীদের বায়না দিতে হয়না আগে থেকে। নিজের মতো করেই শুরু করেন প্রতিমা তৈরি। বদল হয় না মায়ের মূর্তির গঠন, সাজসজ্জা। রথযাত্রার দিন এই কাঠামোগুলিতে এসে মাটি দিয়ে যান শিল্পীরা। তারপর শুরু হয় খড়ের কাঠামো বানানোর কাজ। ভাদ্র মাসের শুরুতেই খড়ের কাঠামোর ওপর শুরু হয় মাটির প্রলেপ। বেশিরভাগ প্রতিমার রূপদান সম্পন্ন হয় চতুর্থীর মধ্যে।
তিন পুরুষ ধরে প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন তুলুসি দাসের পরিবার। তিনি দুটি বনেদি পরিবারের দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ করেন। ৩৫ বছর ধরে তিনি নিজে এই দুই বনেদি পরিবারের দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ করে চলেছেন।
অন্যদিকে উমার আগমনের আগে শুরু হয়েছে, নাড়ু, মুড়কি বানানোর কাজ। এখনও বনেদি পরিবার গুলিতে, পরিবারের সদস্যরা নিজে হাতে এইগুলি তৈরি করেন। তারপর পুজোতে ঘরের মেয়ে উমাকে দেওয়া হয় সেই ভোগ।
সব মিলিয়ে কোভিডের ভয়কে তুচ্ছ করে শুরু হয়েছে মা দুর্গার আগমনের প্রস্তুতি। বনেদি পরিবারগুলি পুজোর আনন্দে শামিল হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদিও তারা বলছেন, কোভিড বিধি মেনেই বাড়িতে পুজো করা হবে। কিন্তু তারা পুজোটা করবেন। কারণ বছরে একবার মাত্র আসেন ঘরের মেয়ে। তাই তার সেবাযত্নে বা তার আগমনে কোনও রকম ত্রুটি রাখতে চাইছেন পরিবারের সদস্যরা। দুই মাস বাকি থাকতেই শুরু হয়ে গিয়েছে বোধনের প্রস্তুতি।






