জামুড়িয়া (Jamiria) বিধানসভার তিলকা মাঝি আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (Teacher) দ্বীপ নারায়ন নায়ক। লকডাউনে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে গিয়ে, তিনি পরিচিত হয়েছেন রাস্তার মাস্টার হিসেবে। দীর্ঘদিন বন্ধ বিদ্যালয়গুলি। ফলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মধ্যে বাড়ছিল স্কুলছুট হওয়ার আশঙ্কা। তাই শিক্ষার আলো যাতে তাদের ওপর পড়তে থাকে, তাই এমন অভিনব পন্থা নিয়েছিলেন তিনি। স্কুল বন্ধ থাকলেও, তিলকা মাঝি আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে গাছের তলায় বসে শিক্ষা প্রদান করেছেন তিনি। শুধুমাত্র ছোট ছোট পড়ুয়াদের নয়, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ, যারা সেভাবে পড়াশোনা করতে পারেননি, তাদেরও পড়াশোনা শিখিয়েছেন এই রাস্তার মাস্টার।
advertisement
শিক্ষক দিবসে (Teachers Day) রাস্তার মাস্টার নিয়েছিলেন বিশেষ কর্মসূচি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছেন শিক্ষা। শূন্য থেকে শুরু\' কর্মসূচির মাধ্যমে, দুয়ারে শিক্ষার আয়োজন করেছিলেন তিনি। স্কুল বন্ধ থাকার ফলে অভিনব পন্থায় শিক্ষা প্রদান করেছেন রাস্তার মাস্টার দীপ নারায়ন নায়ক। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের মাটির বাড়ির দেয়ালগুলিতে তৈরি করা হয়েছিল ব্ল্যাকবোর্ড। বর্ণমালা, সংখ্যা একে দেওয়া হয়েছিল দেওয়ালের ওপর। খোলা আকাশের নিচে অভিনব পন্থায় দুয়ারে শিক্ষার আয়োজন করেছিলেন তিনি। পাঠশালা থেকে আট থেকে আশি সবাইকে শিক্ষা দিয়েছেন এই শিক্ষক।
এছাড়াও সমাজে পিছিয়ে থাকা মানুষের মনে কুসংস্কারের কালোছায়া দূর করতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তিনি। দুয়ারে শিক্ষার পাঠশালায় নিয়ে আসা হয়েছিল মাইক্রোস্কোপ। সেখানে দেখানো হয়েছে ম্যালেরিয়ার জীবাণু। নবীন-প্রবীণ, সব মানুষকে সেই মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে ম্যালেরিয়ার জীবাণু চিনতে দেখা গিয়েছে। শিক্ষা শেষে তারা বুঝতে পেরেছেন, কুসংস্কার নয় ম্যালেরিয়া জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে প্রয়োজন চিকিৎসকের।
লকডাউনের দীর্ঘসময় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে, একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ দিয়েছেন সবাই। জেলার মানুষের কাছে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন রাস্তার মাস্টার। সকলেই বলছেন, এই ধরনের শিক্ষকই সমাজকে নতুন দিশায় চালিত করতে পারবে। এই ধরনের শিক্ষকই আসল শিক্ষারত্ন।
Nayan Ghosh