শহরের বুকে প্রায় সমস্ত কারখানায় প্রতিবছর নিয়ম করে বিশ্বকর্মা পুজো অনুষ্ঠিত হত। বেশ কিছুদিন আগে থেকে কারখানার ঝাড়া মোছার কাজ শুরু হত অর্থাৎ বিশ্বকর্মা পুজো তোরজোড় শুরু হত, প্রায় দিন ১৫ আগে থেকেই। কারখানার কর্মীদের মনে মৃদু খুশির রেস খুঁজে পাওয়া যেত, শহর জুড়ে অসংখ্য ছোট বড় কারখানা সর্বত্রই পুজোর তোড়জোড়। আগের দিন গান বাজনাও শুরু হয়ে যেত কখনও কখনও, সেই সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া হইহুল্লোড়, সব মিলিয়ে এলাহি ব্যাপার।পুজোর দিন সকাল পূজা অর্চনা, গান বাজনা, কারখানার শ্রমিকদের হাতে সাজানো মন্ডপ, আলোকসজ্জা হইহুল্লোড় খাওয়া দাওয়া, এই সময় থেকেই কারখানার কর্মীদের হাতে মিলত পুজোর বোনাসও!
advertisement
আরও পড়ুনঃ আমতার স্কুলে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে সরব অভিভাবকরা
আনন্দ হইহুল্লোড় লেগেই থাকতো শিল্পাঞ্চলে। আমূল পরিবর্তন হয়েছে এশিয়ার শেফিল্ড অর্থাৎ শিল্পনগরী হাওড়াতে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে, আবার বন্ধের মুখেও বহু কারখানা, কোন রকমে টিকে রয়েছে। সেভাবে বরাত আসে না, যদিও বা বরাত আসে সময় মত পেমেন্ট মেলেনা। কারখানার কর্মীরা জানান, বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি মজুরিও। ছোট ব্যবসায়িদের কথায় জানা যায়, বছর চার-পাঁচেক আগে থেকে বাজার আরো মন্দা, যন্ত্রাংশ তৈরীর বরাত কমতে থাকে।
আরও পড়ুনঃ নির্মল বিদ্যালয় গড়ার লক্ষ্যে শ্যামপুরের বিভিন্ন স্কুলে নানান কর্মসূচি
যেগুলো ছোট ব্যবসায়ীরা তৈরি করত, ঐসব যন্ত্রাংশ বহুজাতিক সংস্থাগুলি সরবরাহ করছে, ফলে মুখ থুবড়ে পড়তে বসেছে ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা।এর ফলেই গত কয়েক বছর ধরেই একাধিক ব্যবসায়ী শুধুমাত্র নিয়ম মেনে বিশ্বকর্মা পুজো সারছেন, দেখা যাচ্ছে না প্রতিমা। শুধুই মাত্র ঘট পুজো, তারা জানাচ্ছে কারণ একটাই, ক্রমশ উপার্জন কমছে কাজের বরাত নেই, তাই বাধ্য হয়েই কোনো রকমে বিশ্বকর্মা আরাধনা করছে প্রতিমা ছাড়া। আর যদিও বা মূর্তি পূজা হচ্ছে তা ছোট করে।এর ফলে দারুন ভাবে প্রভাব পড়েছে মৃৎশিল্পীদের উপরও একসময় যেখানে শত শত বিশ্বকর্মা প্রতিমা তৈরি হত, এখন সেখানে হাতে গোনা কয়েকটা।
Rakesh Maity





