কিংশুক বলেন, 'চলতি বছর লিখিত পরীক্ষা না হওয়ার জন্য যে ফর্ম ফিলাপ করতে হবে তা আমার জানা ছিল না। এমনকি স্কুল থেকে যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল, তাতেও আমাকে যুক্ত করা হয়নি। আমি প্র্যাকটিক্যালের অ্যাসাইনমেন্টও স্কুলে গিয়ে জমা দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সেই সময়ও স্কুল থেকে আমাকে কিছুই জানায়নি।'
কিংশুকের ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন আইআইটিতে পড়াশোনা করবে। সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ JEE (Mains) কিংশুক সসম্মানে অতিক্রম করে ফেলেছে। তবে উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট না থাকায় ওর স্বপ্ন আজ সংশয়ের মুখে। কিংশুক বলে, 'যেহেতু করোনাকালে আমরা সবাই ঘরবন্দি। সেহেতু স্কুলে কি হচ্ছে তা আমার জানা ছিল না। এদিকে আমার JEE (Mains) এর রেজাল্ট চলে এসেছে, Advance এ ফর্ম ফিলাপের জন্য উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট প্রয়োজন। শিক্ষা দপ্তর থেকে স্কুল এমনকি শিলিগুড়ি পুরো নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌতম দেবের সঙ্গেও দেখা করেছি।'
advertisement
শুক্রবার এ বিষয়ে নিউজ ১৮ লোকাল দেখা করে শিলিগুড়ি বরদাকান্ত হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ সন্দীপ বসুর সঙ্গে। তিনি বলেন, 'কিংশুক ভালো ছেলে। তবে কোনো কারণবশত ওঁ ফর্ম ফিলাপ করেনি। যার ফলে ওর উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্টও প্রকাশিত হয়নি। বিষয়টি কিংশুক আমাদের নজরে এনেছে। আমি নিজেও বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরের নজরেও এনেছি।'
একই কথা কিংশুকের গৃহশিক্ষক ডঃ পার্থ পন্ডিতেরও গলাতে। শুক্রবার তিনি নিউজ ১৮ লোকালকে তিনি জানান, 'কিংশুক ছোটোবেলা থেকেই যথেষ্ট মেধাবী। দুর্ভাগ্যবশত আজ যে ঘটনাটি ঘটেছে কিংশুকের সঙ্গে, তা সত্যিই ভাবনাতীত। আমি ওকে ছোটবেলা থেকেই পড়াচ্ছি এবং দেখছি, সবসময় বইয়ের মধ্যে ঢুকে থাকা একটি ছেলে। সঠিক যোগাযোগের অভাবে আজ ও পরিস্থিতির শিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখের। পাশাপাশি কিংশুকের মাধ্যমিকের রেজাল্ট যদি দেখা যায় তাহলে ও ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। তাও করোনাকালের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নয়। সেইসঙ্গে Joint Entrance এর Mains এও কিংশুক যথেষ্ট ভালো ফল করেছে। আমরা আশাবাদী ওর রেজাল্ট বের হলে ওঁ উচ্চমাধ্যমিকেও ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করবে।'
যদিও এ প্রসঙ্গে অবগত হওয়ার পর শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌতম দেব কিংশুককে পুরনিগমে দেখা করতে বলেন। সেই মোতাবেক কিংশুকের সঙ্গে এদিন অর্থাৎ শুক্রবার গৌতম দেব বৈঠকও সারেন। যদিও এই বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি গৌতমবাবু। তবে তাঁর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে কিংশুকের দিদি দোলা চক্রবর্তী বলেন, 'গৌতমবাবু বিষয়টি ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। সেইসঙ্গে কিংশুককে শুভাশিস দিয়ে JEE-Advance এর জন্য তৈরিও হতে বলেছেন। এতে আমরা সকলে খুবই খুশি।'