TRENDING:

লকডাউনে প্রকৃতি ফিরছে স্বচ্ছন্দে, দাবি পরিবেশ প্রেমীদের

Last Updated:

বলাবাহুল্য, করোনার বাড়বাড়ন্তে অগত্যা লকডাউনের পথে হেঁটেছে সরকার।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
 #শিলিগুড়ি: করোনা করালগ্রাস আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ? মানবজাতের জীবনে যা বয়ে নিয়ে এসেছে চরম অভিশাপ। তবে প্রকৃতির কাছে সেই \'অভিশাপ\'ই হয়তো আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে।
advertisement

কথায় রয়েছে মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। একদিকে যখন করোনায় রোজ শহরজুড়ে সংক্রামিতের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী, তখনই জনশূণ্য শহরে যেন নবপ্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে, সুস্থ হয়ে উঠছে নগর প্রকৃতি।

বলাবাহুল্য, করোনার বাড়বাড়ন্তে অগত্যা লকডাউনের পথে হেঁটেছে সরকার। দোকান, বাজার নির্দিষ্ট সময়ের পর বন্ধ। অফিসে ঝুলেছে তালা। অটো, গাড়ি সহ নিত্য যানচলাচল বন্ধ। বিনা প্রয়োজনে মোটর বাইকে করে দাপানোতে ছিল প্রতিবন্ধ শহরজুড়ে। তাই শহর এখন অনেকটাই দূষণমুক্ত। বায়ুদূষণের হারও অনেকটাই কমেছে। অন্তত পরিবেশপ্রেমীরা তো তাই মনে করছেন।

advertisement

ঘটনাপ্রসঙ্গে হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর তথা পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু বলেন, \'লকডাউনের প্রভাব যথেষ্ট বেশি। এর প্রভাবে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দিন আনে দিন খায় মানুষগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তবে এই লকডাউনে পরিবেশের ওপর দারুণ প্রভাব পড়েছে। গতবছরও দেখা গিয়েছিল পরিবেশের ওপর লকডাউনের অনেকগুলি ভালো দিক। এবছরও সেই দিকগুলি দেখা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ সরাসরি এই দিকগুলিকে সরাসরি উপলব্ধি করতে পারছে। উদাহরণস্বরূপ বিভিন্ন বিরল প্রজাতির পাখি। ওয়েন্টাল পায়েড হর্নবিল বা ধনেশের মতো বিরল থেকে বিরলতম পাখি শহরের হিলকার্ট রোড সহ বিভিন্ন ব্যস্ততম রাস্তায় নিজেদের উপস্থিতির প্রমাণ দিয়েছে। যা দূষণের মাত্রা কমেছে বলেই সম্ভব। অন্যদিকে নদী-নালা-খাল-বিলে রে বাস্তুতন্ত্র রয়েছে তাও নিজেদের প্রবৃত্তি পরিবর্তন করে নিয়ে সুন্দর-সুস্থ হয়ে উঠেছে।\'

advertisement

অনিমেষবাবু আরও বলেন, \'বন্যপ্রাণীদের ক্ষেত্রেও এই লকডাউন যথেষ্ট ভালো প্রভাব ফেলেছে। বন্যপ্রাণীদের যে বাঁধা ছিল তা সরে যাওয়ায় তাদের বিচরণে স্বতন্ত্র হয়ে যায়। স্বচ্ছন্দে লোকালয়ে বারবার তাদের আসা সেই বার্তাই দিচ্ছে। এমনকি শিলিগুড়ি শহর বা জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন পার্শ্ববর্তী এলাকায় তথা গ্রামাঞ্চলে হাতি, চিতাবাঘের দেখা মিলেছে। সম্প্রতি একটি বাড়িতে হরিণ ঢুকে যাওয়ার ঘটনাও উঠে এসেছে। এই ঘটনাগুলি ঘটার মূল কারণ, মানুষের চলাচল, যানবাহন চলাচল, শহরের ব্যস্ততার কোলাহল স্তব্ধ বলেই সম্ভব হয়েছে। যান্ত্রিক কলকব্জার শব্দ বন্ধ তাই তাঁরা স্বচ্ছন্দ।\'

advertisement

প্রকৃতির পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অনিমেষবাবু বলেন, \'সমস্ত কিছু নিয়েই আমাদের এই ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র। তারমধ্যে জীববৈচিত্র্য হল অন্যতম। এই জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রেও ভীষণভাবে প্রভাব পড়েছে লকডাউনের দৌলতে। যেহেতু মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত হয়ে গিয়েছে, যানবাহন সেই অর্থে চলাচল করছে না; এমনকি আকাশে উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে ট্রেন, বাস, ছোটো গাড়ি, অটো, ট্যাক্সি পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ফলে পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ এমনকি মাইক্রো জীবেরও বৈচিত্র্যে ভীষণভাবে প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। স্বচ্ছন্দতা ফিরেছে। জীবনযাত্রায়ও অনেক বেশি পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে এদের প্রজনন ক্রিয়াও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সংখ্যায় তাদের বৃদ্ধি ঘটবে। যা সরাসরিভাবে আমাদের ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্রের উপর একটা ভালো প্রভাব বিস্তার করবে।\'

advertisement

অন্যদিকে আরও এক পরিবেশপ্রেমী দীপজ্যোতি চক্রবর্তী জানান, করোনা প্রকৃতির জন্য সত্যিই আশির্বাদ। বায়ুদূষণ তো কমেছেই, অনেক পাখিরাও আবার ফিরে এসেছে, নদীতে এখন মাছও বেশি। গাছের রঙেও অনেকটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তবে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে মানুষ সাধারণ ছন্দে ফিরলে দূষণ আবার আগের পর্যায়ে ফিরবে কিনা তা নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট চিন্তিত। যদিও সাধারণ মানুষের কাছে তাঁদের আবেদন শহর করোনামুক্ত হলেও যানবাহনে যাতে রাশ টানা হয়। নাহলে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি হতে পারে আরও ভয়ঙ্কর।

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, \'কারোর পৌষমাস, তো কারোর সর্বনাশ\'। করোনার জেরে মানুষের সর্বনাশ হলেও, প্রকৃতির জন্য যে \'পৌষমাস\' বয়ে নিয়ে এসেছে তা আর বলার অবকাশ রাখে না।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

ভাস্কর চক্রবর্তী

বাংলা খবর/ খবর/Local News/
লকডাউনে প্রকৃতি ফিরছে স্বচ্ছন্দে, দাবি পরিবেশ প্রেমীদের
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল