গ্রীষ্মকালীন পরিস্থিতিতে ধুঁকছে ব্লাড ব্যাংকগুলি। তার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীগুলির তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কার্যত বন্ধ সব। ইচ্ছে থাকলেও যেন উপায় নেই। করোনাকালে শিবিরগুলিতে রীতিমতো শিকল পড়েছে। স্বভাবতই রক্তের অভাবে ধুঁকছে সরকারি ব্লাড ব্যাংক। একই দৃশ্য দেখা গেল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে। কিন্তু বিপদের মাঝেও আশার আলো দেখা দিয়েছে। বলতে গেলে, \'গহণ অন্ধকারে\' যেন আলোর কিরণ নিয়ে এসেছে শিলিগুড়ি তেরাই লায়নস ব্লাড সেন্টার।
advertisement
ব্লাড ব্যাংকের চেয়ারম্যান সুরেন্দ্রজিৎ জৈন বলেন, \'গরমকালে রক্ত সংকট থাকেই। কিন্তু আমাদের চেষ্টা থাকে, যাঁরা আসেন, তাঁদের কাউকে যাতে ফেরৎ না যেতে হয়। করোনাকালে শিবিরগুলির সংখ্যা কমে গেলেও আমরা রক্ত সংগ্রহ করার চেষ্টা করি। ১৯৯২ সাল থেকে এই ব্লাড ব্যাংক পরিষেবা দিয়ে চলেছে। শুধুমাত্র রক্তের সরোবরাহ না, আমরা থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরও বিশেষ যত্ন নি। এছাড়াও করোনাকালে অক্সিজেন সরবরাহে এগিয়ে এসেছি আমরা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির কাছে অনুরোধ, রক্তদান শিবিরগুলো বাড়াতে হবে।\'
অন্যদিকে ব্লাড ব্যাংকের প্রশাসনিক আধিকারিক স্নেহদীপ লাহিড়ী জানান, রোজ প্রায় ১৫০ ইউনিট রক্তের চাহিদা আসে। কিন্তু ক্যাম্পগুলি বন্ধ থাকার দরুণ সেই সংখ্যায় পৌঁছাতে পারছেন না ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যদিও রক্ত মজুদ করা থাকে, কাউকে ফিরিয়ে দিতে হয় না।
চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ভাস্কর ভারদ্বাজ বলেন, \'শিলিগুড়িতে এই মুহূর্তে প্রায় ১৫০ জন থ্যালেসেমিয়ার রোগী রয়েছেন। ক্লাবে এই রোগীদের একটি ডে-কেয়ার সেন্টার চলছে। এছাড়াও শহরজুড়ে প্রচুর রোগীদের আমরা বিনামূল্যে রক্তের জোগাড় করে দেই। সেখানে আমরা বলব আপনারা নিজেদের উদ্যোগে ক্যাম্প করুন। বন্ধু এবং আত্মীয়দের বলুন রক্তদান করতে। তবেই আমরা সবাই এই রক্ত সংকট থেকে বেড়িয়ে আসতে পারব।\'
এই পরিস্থিতিতে রক্ত সংকট মেটাতে তৎপর হয়েছে বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক। রাস্তায় রাস্তায় মোবাইল ব্লাড কালেকশন ভ্যানগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। রোগীদের যাতে রক্তের খোঁজে এসে ফিরে যেতে না হয়, তাই রক্ত সংগ্রহে জোর দিচ্ছে বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক।
ভাস্কর চক্রবর্তী